ট্রেন

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়ার তালিকা, টিকিটের মূল্য ও ছুটির দিন

বাংলাদেশের একটি আন্তঃনগর ট্রেন জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস যার ট্রেন নাম্বার আছে 717 ও 718। ইট এন্টি বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত এবং নিয়ন্ত্রিত। এটি বাংলাদেশের দূরত্ব ও বিলাসবহুল ট্রেন গুলোর মধ্যে অন্যতম। তিনটি ঢাকা থেকে সিলেট রুটে নিয়মিত চলাচল করেন। জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে যাত্রা শুরু করেন এবং ১৯৮৬ সালের 13 ই মে প্রথম উদ্বোধন করা হয়।

সুতরাং আজ আমরা আপনাদের সাথে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়ার তালিকা, অনলাইন টিকিট খাবার ব্যবস্থা বিরোধী স্থান ও বিস্তারিত তথ্য সহ হাজির হবো আপনি যান্ত্রিক এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কে জানতে চান ও পারবেন।

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ

যদি আপনি জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের বিস্তারিত বিবরণ অর্থাৎ বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার জন্য। সুতরাং আপনি এখান থেকে ট্রেনটির বিস্তারিত বিবরণ জানতে পারবেন।

  • পরিষেবা ধরন:               আন্তঃনগর ট্রেন
  • প্রথম পরিষেবা:               ১৩ মে ১৯৮৬; ৩৫ বছর আগে
  • বর্তমান পরিচালক: পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে
  • যাত্রাপথ শুরু:               কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন
  • বিরতি:                         ১৪টি
  • শেষ:                      সিলেট রেলওয়ে স্টেশন
  • ভ্রমণ দূরত্ব:                 ৩১৯ কিলোমিটার (১৯৮ মাইল)[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  • পরিষেবার হার:                সপ্তাহে ৬ দিন
  • যাত্রাপথের সেবা শ্রেণী: শোভন চেয়ার, এসি চেয়ার, এসি কেবিন
  • আসন বিন্যাস:              আছে
  • ঘুমানোর ব্যবস্থা: আছে
  • খাদ্য সুবিধা:              আছে
  • বিনোদন সুবিধা: আছে
  • মালপত্রের সুবিধা: আছে
  • কারিগরি গাড়িসম্ভার: বর্তমানে এই ট্রেনটিকে ইন্দোনেশিয়ান পিটি ইনকা রেক বা কোচ দ্বারা পরিচালনা করা হয়। এই ট্রেনটিতে ১৪টি বগি রয়েছে। যার মধ্যে ২টি গার্ড কার+শোভন চেয়ার+খাবার গাড়ি, ২টি এসি চেয়ার, ১টি এসি স্লিপার, ১টি পাওয়ার কার, ৮টি শোভন চেয়ার বগি।
  • ট্র্যাক গেজ:   মিটারগেজ
  • রক্ষণাবেক্ষণ: কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও সিলেট রেলওয়ে স্টেশন

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করেন এবং তিনটি কমলাপুর থেকে ছেড়ে যান 11:15 এবং সিলেটে পৌঁছান 19 টায়। অপরদিকে ট্রেনটি সিলেট থেকে ছেড়ে চলে যায় 15 মিনিট এবং কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছান 18:25।

ট্রেন নাম্বার উৎস স্থান ছাড়ার সময় পৌঁছানোর স্থান পৌঁছানোর সময় সাপ্তাহিক ছুটি

 

৭১৭ কমলাপুর ১১:১৫ সিলেট ১৯:০০ মঙ্গলবার
৭১৮ সিলেট ১১:১৫ কমলাপুর ১৮:২৫ বৃহষ্পতিবার

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের মূল্য

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে সিলেট রেল স্টেশন পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করেন। এই ট্রেনটির তিনটি আসন রয়েছে এবং প্রত্যেকটি আসনের আলাদা আলাদা ভাড়া রয়েছে। আপনি যদি আসনগুলোর নামো ভাড়ার তালিকা জানতে চান তারা নিচের সারণি থেকে জেনে নিতে পারবেন.

সিরিয়াল   আসন বিভাগ টিকেটের মূল্য (১৫% ভ্যাট)
১. শোভন চেয়ার ২৯৫ টাকা
২. প্রথম সিট ৩৯৫ টাকা
৩. এসি সিট ৬৭৯ টাকা

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের বিরতি স্টেশন ও সময়সূচী

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে সিলেট যাত্রাকালীন যেসকল স্টেশনে বিরোধী প্রদান করেন এবং কতটুকু সময় বিরতি প্রদান করেন তার বিস্তারিত তথ্য নিচে সারণি থেকে জানতে পারবেন।

বিরতি স্টেশন নাম ঢাকা থেকে (৭১৭) সিলেট থেকে (৭১৮)
বিমান বন্দর ১১ঃ৪২ ১৭ঃ৫৭
আশুগঞ্জ ১৩ঃ০১ ১৬ঃ৩৮
বি- বাড়িয়া ১৩ঃ২০ ১৬ঃ১৯
আজিম পুর ১৩ঃ৫২ ১৫ঃ৫৫
মোকন্দপুর ১৪ঃ১০ ১৫ঃ৩৮
হরষপুর ১৪ঃ২৫ ১৫ঃ২৫
মনতলা ১৪ঃ৩৮ ১৫ঃ১২
নওয়াপাড়া ১৪ঃ৫৫ ১৪ঃ৪৮
শাহজীবাজার ১৫ঃ১০ ১৪ঃ২৮
শায়েস্তাগঞ্জ ১৫ঃ২৭ ১৪ঃ১৩
শ্রীমঙ্গল ১৬ঃ১০ ১৩ঃ০৩
ভান গাছ ১৬ঃ৩৩ ১৩ঃ০৮
কুলাউড়া ১৭ঃ২৭ ১২ঃ৩২
মাইজগাঁও ১৮ঃ০০ ১১ঃ৫৫

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস সাপ্তাহিক ছুটির দিন

জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিয়মিত ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত চলাচল করে থাকেন এবং সপ্তাহে দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটির দিন প্রদান করেন। এই ট্রেনটি সপ্তাহে মঙ্গলবার বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ছুটি কবে বন্ধ রাখেন এবং বাকি দিন নিয়মিত চলাচল করেন

খাওয়ার ব্যবস্থা

এই আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে খাওয়ার ব্যবস্থা সুবিধা রয়েছে. সুতরাং ট্রেন কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সুবিধার্থে একটি খাবারের কেবিন রেখেছেন যেখানে যাত্রীগণ সহজে খেতে পারবেন. তবে যে সমস্ত খাওয়ার এই ট্রেনের কেবিনে পাওয়া যায় তা হল: বার্গার, কেক, স্যান্ডউইচ, পেটিস, রোল, পারুটি, চা-কফি, কাটলেট, সিদ্ধ ডিম, চিকেন কাবাব, নানা ধরনের পানি ও মিনারেল ওয়াটার. সুতরাং এখান থেকে আপনি এছাড়াও আরও সুবিধা পাবেন দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিন.

ট্রেনের টিকিট কাটার স্থান

আন্তঃনগর ট্রেনটির ট্রেনের টিকিট যেখান থেকে পাওয়া যাবে তার একটি বর্ণনা নিম্নে তুলে ধরা হলো:

  • দেশের সকল টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটা যাবে
  • টেনের ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কাটা যাবে (www.esheba.cnsbd.com)
  • *১৩১# নম্বরে ডায়াল করে এসএমএস এর মাধ্যমে টিকিট বুক করা যাবে.
  • টিকিটের জন্য কনফার্মেশন মেসেজ পাঠানো হবে, তা যাত্রা ন্যূনতম আধাঘন্টা আগে, সংশ্লিষ্ট রেলস্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট প্রিন্ট করতে হবে
  • তবে যাত্রা দশদিন পূর্ব থেকে অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাচ্ছে দেশের যেকোন কম্পিউটারাইজড টিকিট কাউন্টারে এবং ওয়েবসাইটে.

ট্রেনের বগি সংখ্যা

আজ আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব এই ট্রেনের মোট বগি সংখ্যা এবং কি কি বগি রয়েছে.

  • এই ট্রেনটিতে মোট বগি রয়েছে ১৬টি.
  • একটি খাবার বগি রয়েছে
  • একটি পাওয়ার কার বগি রয়েছে
  • ট্রেনটিতে খাবারের বগির মধ্যে নামাজের জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ রয়েছে
  • এবং ট্রেনের মাঝামাঝি জায়গায় খাবারের বগিটি রয়েছে

অন্যান্য সুবিধাদি

  • আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে নামাজের জন্য ব্যবস্থা আছে
  • প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে কর্তব্যরত গার্ডের কাছে
  • প্রত্যেক বগিতে একজন করে গাইড থাকার ব্যবস্থা আছে। তবে তারা যাত্রীদের সেবা, প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ট্রেনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
  • যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে জানালার পাশে এ্যালুমিনিয়ামের শাটার। ট্রেনে ভ্রমণকালে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন – ট্রেনের দরজা-জানালায় না বসা, ট্রেনের ছাদে না ওঠা, ইঞ্জিনে না চড়া। ঘনবসতি বা বস্তি এলাকাতে ট্রেন চলার সময় জানালার শাটার লাগিয়ে দেয়া।
  • এসি কেবিন ছাড়া শোভন বগিতে স্ট্যান্ডিং টিকেট কাটার সুবিধা রয়েছে। মোট বরাদ্দকৃত টিকেট বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর স্ট্যান্ডিং টিকেট দেয়া হয়। স্ট্যান্ডিং টিকিটের মূল্য সিটিং টিকেটের সমান এবং সাথে সাধারণ টিকেটের মতই পণ্য নেয়া যায়।

মালামাল পরিবহন

  • একজন শীতাতপ শ্রেণীর যাত্রী ৫৬ কেজি, প্রথম শ্রেণীর যাত্রী ৩৭.৫ কেজি, শোভন শ্রেণীর যাত্রী ২৮ কেজি এবং সুলভ ২য় শ্রেণীর যাত্রী ২৩ কেজি মালামাল বিনা ভাড়ায় সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন।
  • অতিরিক্ত মালামাল মাশুল পরিশোধ করে তা লাগেজ হিসেবে তার নিজ গন্তব্যে নিতে পারেন। বড় স্টেশনগুলোতে লাগেজ বুকিংয়ের জন্য আলাদা কাউন্টার রয়েছে।
  • লাগেজ বহনের জন্য ট্রলির ব্যবস্থা আছে।
  • অসুস্থ ব্যাক্তিদের বহনের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা আছে

আলোচনা শেষ প্রান্তে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আন্তঃনগর ট্রেন এবং একটি বিলাসবহুল ট্রেন গুলোর মধ্যে অন্যতম। ঢাকা থেকে সিলেট থেকে পাঁচটি ট্রেন চলাচল করে তার মধ্যে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি অন্যতম। এটি একটি ভাড়ার তালিকা সময়সূচী খাবার ব্যবস্থা মালামাল পরিবহনের তথ্য ও অন্যান্য সুবিধা বিস্তারিত তথ্য আমাদের এই নিবন্ধ থেকে জানতে পারবেন। তবে ট্রেনটির ভাড়ার তালিকা সময়সূচী আপডেট হলে তাৎক্ষণিক আমাদের ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারবেন।

Related Articles

Back to top button