Ramjan

রমজানের তারাবিতে কোরআন খতম দেওয়ার নিয়ম কিংবা পদ্ধতি

মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজান মাস এবং আল্লাহতালা পবিত্র কোরআন রমজান মাসে নাযিল করেছেন। পবিত্র রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়া গুরুত্বপূর্ণ আমল জান নবী করীম সাল্লাহু সাল্লাম এবং সাহাবীগণ করেছেন। এই তারাবি নামাজগুলো মসজিদে জামাতের শাহজাদ আদায় করতে হয় এবং পুরো রমজান মাসব্যাপী এই নামাজগুলো আদায় করা হয়।

রমজানের তারাবিতে কোরআন খতম দেওয়ার নিয়ম পদ্ধতি

নিচের নিয়ম বা পদ্ধতি কোন অনুযায়ী রমজান মাসের তারাবিতে কোরআন খতম দেওয়া যায় :

তারাবিতে কোরআন খতমের পরিকল্পনা করতে হবে

  • ২০ রাকাত তারাবি হলে: প্রতিদিন গড়ে পারা করে তেলাওয়াত করলে ২৭ বা ২৯ রমজানের মধ্যে খতম হয়ে যায়।
  • রাকাত তারাবি হলে: দৈনিক বেশি আয়াত বা পৃষ্ঠা পড়তে হবে যাতে ৩০ দিনে খতম সম্ভব হয়।
  • মসজিদের পরিকল্পনা অনুযায়ী: ইমাম সাহেব সাধারণত পুরো মাসের জন্য কুরআন ভাগ করে নেন, যেন ২৭ বা ২৯ রমজানে খতম হয়।

৩০ দিনে খতমের পরিকল্পনা তালিকা

রমজানে তারাবিতে খতম দিতে চাইলে প্রতিদিন নিম্নলিখিতভাবে পারা ভাগ করা যেতে পারে:

দিন পারা সংখ্যা
১ম দিন ১ম পারা
২য় দিন ২য় পারা
৩য় দিন ৩য় পারা
৪র্থ দিন ৪র্থ পারা
২৭তম দিন ২৭তম পারা
২৮তম দিন ২৮তম পারা
২৯তম দিন ২৯তম পারা
৩০তম দিন ৩০তম পারা (শেষ)

কিছু মসজিদ ২৭তম রাতে খতম করে, তাই তারা প্রতিদিন গড়ে ১.২৫ পারা বা তার বেশি পড়ে।

তারাবি নামাজে কুরআন খতম দেওয়ার কিছু সুন্নত

  • ধীরে ধীরে, স্পষ্ট তাজবীদ সহকারে পড়া উচিত।
  • মুসল্লিদের বোঝার সুবিধার্থে শুদ্ধ উচ্চারণে তেলাওয়াত করা ভালো।
  • রাতে বেশি ক্লান্ত না হয়ে ফজরের পর বা দিনের অন্য সময় হিফজের অনুশীলন করা ভালো।
  • কুরআন খতমের দোয়া করাএটি খুব ফজিলতপূর্ণ এবং কবুলের সময় বলে ধরা হয়।
  • একা একা কোরআন খতমের নিয়ম তারাবি পড়লে
  • প্রতিদিন পারা করে পড়লে ৩০ দিনে খতম হবে।
  • ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব বা রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ভাগ করে পড়তে পারেন।
  • যারা ব্যস্ত, তারা প্রতিদিন অন্তত ১০ পৃষ্ঠা পড়ার পরিকল্পনা করতে পারেন।

তারাবিতে কোরআন খতম দিতে না পারলে পরবর্তী  করণীয়

  • তারাবিতে খতম দিতে না পারলে করণীয়
  • যদি ৩০ দিনে কুরআন খতম সম্ভব না হয়, তাহলে যতটুকু সম্ভব পাঠ করা উচিত।
  • বেশি আয়াত মুখস্থ থাকলে তেলাওয়াত সহজ হয়, তাই আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া উত্তম।

 কুরআনের দৃষ্টিতে তারাবিতে খতম কুরআন

আল্লাহ বলেন:

রাতের কিয়াম (তারাবি) সম্পর্কে

 “রাতের এক অংশে কুরআন সহ নামাজ পড়ুন, এটি আপনার জন্য অতিরিক্ত ইবাদত। হয়তো আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রশংসিত অবস্থানে পৌঁছে দেবেন।“- (সূরা আলইসরা: ৭৯)

কুরআন খতমের গুরুত্ব

রমজান মাস, যাতে কুরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হেদায়েতস্বরূপ এবং সুস্পষ্ট পথনির্দেশ সত্যমিথ্যার পার্থক্যকারী হিসেবে।“- (সূরা আলবাকারাহ: ১৮৫)

 হাদিসের আলোকে তারাবিতে কুরআন খতম

রাসুলুল্লাহ রমজানে এবং অন্যান্য মাসেও ১১ রাকাতের বেশি নামাজ পড়তেন না। তিনি প্রথমে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে কুরআন পড়তেন, তারপর রুকু সিজদা করতেন।” (সহিহ বুখারি: ১১৪৭, মুসলিম: ৭৩৮)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন:”জিবরাইল (আঃ) প্রতি রমজানে নবিজি (ﷺ)-এর সঙ্গে কুরআন তিলাওয়াত করতেন এবং শেষ রমজানে দুইবার খতম করেছিলেন।” (সহিহ বুখারি: ৪৯৯৭, মুসলিম: ৮০৪)

সাহাবাদের আমল-“উমর (রাঃ) তারাবির জামাতে উবাই ইবনে কাব (রাঃ)-কে ইমাম বানিয়েছিলেন, যিনি মুসল্লিদের নিয়ে ২০ রাকাত তারাবি পড়াতেন এবং পুরো রমজানে কুরআন খতম করতেন।-(মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৭৫৯১)

তারাবিতে কুরআন খতমের নিয়ম

৩০ দিনে কুরআন খতম করতে চাইলে: প্রতিদিন পারা করে পড়তে হবে।

 ২৭ রমজানে খতম করতে চাইলে: প্রতিদিন গড়ে .২৫ পারা পড়তে হবে।

রাকাত বা ২০ রাকাতের পার্থক্য: হানাফি মাজহাব অনুসারে ২০ রাকাত তারাবি পড়া সুন্নাতে মুআক্কাদা, এবং তাতে কুরআন খতম করা উত্তম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button