Ramjan

শবে কদর নিয়ে দোয়া, বাণী, উক্তি, এসএমএস ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস

শবে কদর আছে মহামূল্যবান রাত এবং বরকত ময় রাত। এই রাতকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ রাত বলা হয়। এই রাতের ইবাদত অন্যান্য হাজার বছরের ইবাদতের চেয়ে উত্তম। পবিত্র রমজান মাসের ২৭ তারিখের রাতে ইবাদত পালন করা হয়ে থাকে। যারা রমজান মাসের রাতকে অন্য উক্তি এবং বাণীর মাধ্যমে তুলে ধরতে চান তাদের জন্য আজকের পোস্টটি।

শবে কদর নিয়ে উক্তি

কুরআনে বর্ণিত:

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ ۝ وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ ۝ لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ

(সুরা আলকদর: )

অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি একে (কুরআন) নাজিল করেছি কদরের রাতে। তুমি কি জানো কদরের রাত কী? কদরের রাত এক হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।

হাদিস থেকে:

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

যে ব্যক্তি ঈমান সওয়াবের আশায় শবে কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।“-(সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯০১)

ইমাম গাযালির উক্তি:-“শবে কদর এমন এক রাত, যেখানে বান্দার নেক আমল আল্লাহর রহমতে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম হয়ে যায়।

মাওলানা রুমি বলেছেন:-“আল্লাহর রহমতের দরজা শবে কদরে উন্মুক্ত থাকে, শুধু সেই ব্যক্তি বঞ্চিত হয় যে তা পেতে আগ্রহী নয়।

কুরআনের বাণী:-নিশ্চয়ই আমি কদর রাতে কুরআন অবতীর্ণ করেছি।“-(সূরা আলকদর: )

শবে কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।“-(সূরা আলকদর: )

সে রাতে ফেরেশতারা এবং রূহ (জিবরাইল .) তাঁদের প্রতিপালকের নির্দেশক্রমে সকল বিধান নিয়ে অবতরণ করেন। শান্তিই শান্তি বিরাজ করে ফজরের উদয় পর্যন্ত।“-(সূরা আলকদর: )

হাদিসের বাণী:

যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে নামাজ আদায় করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।“-(বুখারি: ২০১৪, মুসলিম: ৭৬০)

তোমরা রমজানের শেষ দশ রাতের বিজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত অনুসন্ধান করো।“-(বুখারি: ২০২০, মুসলিম: ১১৬৯)

**নবী (সা.) শিখিয়েছেন শবে কদরের দোয়া:

اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني

(উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফাফু আন্নি)

(অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি পরম ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা করাকে ভালোবাসো, তাই আমাকে ক্ষমা করে দাও) (তিরমিজি: ৩৫১৩)

ইসলামিক মনীষীদের বাণী:

শবে কদর সেই রাত, যখন আসমানের দরজা খুলে যায়, দোয়া কবুল হয় এবং রহমত বর্ষিত হয়।

এই রাত আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠ সুযোগ, রাতের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদতে কাটানো উচিত।

যে ব্যক্তি শবে কদরে ক্ষমা চাইবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন, ইনশাআল্লাহ।

শবে কদর নিয়ে ছন্দ

শবে কদর রাতটি যে কত মহান,

হাজার মাসের চেয়েও সম্মান।

ফেরেশতারা নামে রহমত নিয়ে,

শান্তি বিরাজে ধরণীর বুকে।

 

রাতভর যদি ইবাদত করি,

গুনাহ মাফ হবে, জান্নাত গড়ি।

দোয়া করো, চাও ক্ষমা,

আল্লাহ দেবেন রহমতের সমাহার।

 

কুরআন নাজিল হলো রাতে,

হেদায়েত এলো মানব জাতিতে।

তাহলে কেন দেরি করি?

এই রাতে আসো, নামাজ পড়ি।

 

আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত চাই,

কদরের রাতে অশ্রু ঝরাই।

এই রাতেতে করো জিকির,

বদলে যাবে তোমার তাকদির।

 

শবে কদর নিয়ে এসএমএস

শবে কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। রাতে আল্লাহর রহমত মাগফিরাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। আসুন, আমরা বেশি বেশি ইবাদত করি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করি।

হে আল্লাহ! তুমি পরম ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা করাকে ভালোবাসো, তাই আমাদের ক্ষমা করে দাও।” – (তিরমিজি: ৩৫১৩) শবে কদরের এই বরকতময় রাতে বেশি বেশি দোয়া করুন।

এই রাতটি ফিরে আসে রহমত নিয়ে, ক্ষমা নিয়ে, মুক্তির বার্তা নিয়ে। শবে কদরের মহিমা অর্জনে আসুন, নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত দোয়ায় মগ্ন হই।

 “ রাত দোয়া কবুলের রাত, গুনাহ মাফের রাত, তাকদির বদলের রাত। তাই আসুন, এই রাতে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করি এবং গুনাহ মাফ চেয়ে নেই।

 “শবে কদরের রাতে অন্তর থেকে একটি দোয়া – ‘হে আল্লাহ, আমাদের পাপ ক্ষমা করো, জীবনকে বরকতময় করো, জান্নাতের পথ সহজ করে দাও।আমিন!”

 “রাতটি ইবাদতে কাটাই, কুরআনের আলোয় জীবন সাজাই। আল্লাহ আমাদের সবার দোয়া কবুল করুন, আমিন!”

শবে কদর নিয়ে কবিতা

শবে কদর: রহমতের আলো

 হাজার মাসের চেয়েও যে শ্রেষ্ঠ,

আসমানে নামে রহমতের দৃষ্টি।

নামাজ, দোয়া, কান্নাভেজা রাত,

গুনাহ মাফের স্বর্ণসুযোগ তাত।

 

 এই রাতেতে নাজিল কুরআন,

মানব জাতির হেদায়েতের গান।

ফেরেশতারা নামে শুভ সংবাদ,

রাব্বুল আলামিন দেন রহমত বৃষ্টি অবিরত।

 

 কে জানে কবে আসবে এই রাত,

শেষ দশকের বিজোড়ের সাথ।

তাই করো ইবাদত, করো জিকির,

তাকদির বদলে যাবে নির্ঘাত।

 

 হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল,

তুমি দয়া করো, করো মুক্তি দান।

আমাদের জীবন করো পূতপবিত্র,

শবে কদরের বরকতে ভরে দাও প্রাণ।

 শবে কদরের নামাজের নিয়ত

আরবীতে:নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লাহি তালারাকআতাই ছালাতি লাইলাতুল কদরনাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল্ কাবাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার

 বাংলায়:আমি ক্বেবলামূখী হয়ে আল্লাহ্ এর উদ্দেশ্যে শবে কদরের দুরাকআত নফল নামাজ আদায়ের নিয়ত করলামআল্লাহু আকবার

শবে কদরের দোয়া

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে:-

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

এ ছাড়াও আল্লাহ তাআলার ক্ষমা লাভে কুরআনুল কারিমে তিনি বান্দার জন্য অনেক দোয়া তুলে ধরেছেন। যা নামাজের সেজদা, তাশাহহুদসহ সব ইবাদত-বন্দেগিতে পড়ার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। আর তাহলো-

 رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ

উচ্চারণ: ‘রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রভু! (আমাকে) ক্ষমা করুন এবং (আমার উপর) রহম করুন; আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৮)

 رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

উচ্চারণ: ‘রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।’

অর্থ: ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১০৯)

 رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ

উচ্চারণ: ‘রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।’

অর্থ: ‘(হে আমার) প্রভু! নিশ্চয়ই আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ১৬)

رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ: ‘রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’

অর্থ: হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং তুমি আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৬)

رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ

উচ্চারণ: ‘রাব্বানা জ্বালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।’

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রভু! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২৩)

 رَبَّنَا اغْفِرْ لِيْ وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ

উচ্চারণ: ‘রাব্বানাগফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’

অর্থ: হে আমাদের প্রভু! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন তুমি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা কর।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)

سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ

উচ্চারণ: ‘সামিনা ওয়া আত্বানা গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছির।’

অর্থ: ‘আমরা (আপনার বিধান) শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা করুন। আপনার দিকেই তো (আমাদের) ফিরে যেতে হবে।’ (সুরা আল-বাকারাহ : আয়াত ২৮৫)

 رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ  وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلاَنَا 

উচ্চারণ: ‘ওয়াফু আন্না ওয়াগফিরলানা ওয়ারহামনা আংতা মাওলানা ফাংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।’

অর্থ: ‘হে আমাদের রব! যে বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের নেই, সে বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের পাপ মোচন করুন। আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। তুমিই আমাদের প্রভু।’ (সুরা বাকারাহ : আয়াত ২৮৬)

 رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُوْنَا بِالْإِيْمَانِ

উচ্চারণ: ‘রাব্বানাগফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি।’

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ক্ষমা করুন এবং যারা আমাদের আগে যারা ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদেরকেও ক্ষমা করুন।’ (সুরা হাশর : আয়াত ১০)

 رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِيْ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ

উচ্চারণ: ‘রাব্বানাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আক্বদামানা ওয়াংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।’

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিন। আমাদের কাজের মধ্যে যেখানে তোমার সীমালঙ্ঘন হয়েছে, তা মাফ করে দিন। আমাদের কদমকে অবিচল রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৭)

رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ

উচ্চারণ: ‘রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সায়্যিআতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আবরার।’

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রভু! সুতরাং আমাদের গোনাহগুলো ক্ষম করুন। আমাদের ভুলগুলো দূর করে দিন এবং সৎকর্মশীল লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯৩)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button