উৎসব

স্বাধীনতার কবিতা আবৃতি

আজ আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব স্বাধীনতার কবিতা আবৃতি নিয়ে। আপনি যদি স্বাধীনতার ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য। আমরা স্বাধীনতার ইতিহাস ও ঘটনাবলী জানার জন্য স্বাধীনতার কিছু কবিতা আবৃতি এখানে সংযুক্ত করব। তাছাড়াও 26 শে মার্চ উপলক্ষে সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীনতার কবিতা আবৃতি আয়োজন করে থাকেন। কবিতা আবৃত্তির মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতার ইতিহাস ও ঘটনাকে কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে জানা।

আসুন স্বাধীনতার কবিতা আবৃতি মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতার ইতিহাস কে জানতে শিখি এবং বিশ্বের দরবারে কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার তাৎপর্য ও ঘটনাবলী জানার সুযোগ করে দিতে পারেন।

স্বাধীনতার কবিতা আবৃতি

আপনি কি স্বাধীনতার কবিতা আবৃত্তি খুঁজছেন?. তবে ছাড়া স্বাধীনতা কবিতা আবৃতি খুঁজছেন এবং কবিতা আবৃতি সংগ্রহ করতে চান তাদের জন্য এই পোস্টটি প্রযোজ্য রয়েছে. বর্তমান প্রজন্ম ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্বাধীনতা কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে স্বাধীনতার গুরুত্ব ও অন্যাকে খুব সহজে জানা সম্ভব.

স্বাধীনতার কবিতা আবৃত্তির সর্বশেষে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পিছনে বড় ইতিহাস রয়েছে। এইজন্য বাঙালিরা স্বাধীনতার কে স্মরণ করার জন্য প্রতিবছর 26 শে মার্চ বিভিন্ন ভাবে পালন করে থাকেন। তাদের মধ্যে একটি মাধ্যম হচ্ছে স্বাধীনতার কবিতা আবৃতি। যারা কবিতা আবৃতি কে পছন্দ করেন এবং কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে চান তাদের জন্য আমরা কিছু স্বাধীনতার কবিতা আবৃতি এখানে উপস্থাপন করেছি.

একটি পতাকা পেলে

– হেলাল হাফিজ

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস

ব্যর্থ চল্লিশে বসে বলবেন,–’পেয়েছি, পেয়েছি’।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে

ওম নেবে জাতীয় সগীত শুনে পাতার মর্মরে।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে




ভূমিহীন মনুমিয়া গাইবে তৃপ্তির গান জ্যৈষ্ঠে-বোশেখে,

বাঁচবে যুদ্ধের শিশু সসন্মানে সাদা দুতে-ভাতে।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,

সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ

সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে।

শহীদদের প্রতি

 __আসাদ চৌধুরী

তোমাদের যা বলার ছিল

বলছে কি তা বাংলাদেশ ?

শেষ কথাটি সুখের ছিল ?

ঘৃণার ছিল ?

নাকি ক্রোধের,

প্রতিশোধের,

কোনটা ছিল ?

নাকি কোনো সুখের

নাকি মনে তৃপ্তি ছিল

এই যাওয়াটাই সুখের।

তোমরা গেলে, বাতাস যেমন যায়

গভীর নদীযেমন বাঁকা

স্রোতটিকে লুকায়

যেমন পাখির ডানার ঝলক

গগনে মিলায়।

সাঁঝে যখন কোকিল ডাকে

কারনিসে কি ধুসর শাখে

বারুদেরই গন্ধস্মৃতি

ভুবন ফেলে ছেয়ে

ফুলের গন্ধ পরাজিত

স্লোগান আসে ধেয়ে।

তোমার যা বলার ছিল

বলছে কি তা বাংলাদেশ ?

স্বাধীনতা দিবসের কবিতা

আনিসুল হক

তাঁরা আমাদের দেশ দিয়ে গেছেন

 পতাকা দিয়েছেন,

মানচিত্র দিয়েছেন।

আমাদের আগের প্রজন্ম,

তাঁরা তাঁদের কাজ করে গেছেন।

আমি তো ফারুক ইকবালের গল্প জানি,

তিনি আবুজর গিফারী কলেজের ছাত্র ছিলেন,

১৯৭১ সালের মার্চের তিন তারিখে বঙ্গবন্ধুর জনসভায় যাওয়ার জন্য মিছিল নিয়ে বেরিয়েছিলেন মালিবাগ থেকে,

রামপুরা টিভিভবনের সামনে পাকিস্তানি সৈন্যরা রাস্তা পাহারা দিচ্ছিল,



চালাল গুলি,

রাস্তায় পড়ে গেলেন ফারুক ইকবাল।

পানি, একটু পানি—আর্তি শোনা গেল,

জনতা ছুটল পানির খোঁজে,

ফিরে এসে দেখল ফারুক ইকবাল বুকের রক্ত দিয়ে কালো রাজপথে

লেখার চেষ্টা করছেন ‘জয় বাংলা’।

আমি তো কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনের কথা জানি, ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ ভোরে

পাকিস্তানি মিলিটারি তাঁর বাড়ি ঘেরাও করল,

বুটের শব্দ খট খট খট,

দরজায় আঘাত ঠক ঠক ঠক,

তিনি দরজা খুললেন,

তারা বলল, বল, পাকিস্তান জিন্দাবাদ,

তিনি বললেন, এক দফা জিন্দাবাদ,

তারা বলল, বল, পাকিস্তান জিন্দাবাদ,

তিনি বললেন, স্বাধীনতা...

আমাদের বড় ভাইয়েরা হাসতে হাসতে তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন আমাদের ভালো রাখার জন্য

আমাদের একটা নির্ভয় দেশ দেবেন বলে...



আমি একজন নারীর কথা জানি,

যিনি একটা পুকুরের পাশে কাপড় কাচছিলেন,

সেই পুকুরে পানার নিচে কোনো রকমে নাক ভাসিয়ে লুকিয়ে ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা।

মিলিটারি বলল, মুক্তি কিধার হ্যায়,

নারীটি বললেন, দেখিনি,

মিলিটারি চলে যাচ্ছিল,

হঠাৎ নড়ে উঠল পানা,

মিলিটারি গুলি করে মেরে ফেলল সেই নারীটিকে।




যেমন এক নারী ভোরবেলা গ্রাম্য কুটিরের দুয়ারে

বসে কোরান শরিফ পড়ছিলেন,

ভেতরে ছিল মুক্তিযোদ্ধারা,

পাকিস্তানি মিলিটারি ওই ঘরের দুয়ার থেকে ফিরে গেল,

মুক্তিযোদ্ধা নিরাপদে সরে গিয়ে আক্রমণ করল পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর,

ফেরার পথে মিলিটারিরা জ্বালিয়ে দিল ওই বাড়ি,

শহীদ হলেন সেই নারী।




আমি একজন বাবার কথা জানি।

তাঁর একমাত্র ছেলে নারায়ণগঞ্জে অপারেশনে এসে শহীদ হলো।

মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে সেই খবর দিল, কাকা, আপনার ছেলে শহীদ হয়েছে।

তিনি কাঁদতে লাগলেন। বললেন, আমি এ জন্য কাঁদছি না যে আমার একমাত্র ছেলে শহীদ কেন হলো?

আমি কাঁদছি এই জন্য যে আমার কেন একটা মাত্র ছেলে।

আজ আরেকজন ছেলে থাকলে তো আমি তাকে যুদ্ধে পাঠাতে পারতাম।




আমি একজন বোনের কথা জানি।

একাত্তরে তার পেটে গুলি লেগেছিল। তাকে নেয়া হয়েছিল

আগরতলার হাসপাতালে।

রক্ত দরকার। রক্ত জোগাড় করা যায়নি,

ডাক্তারের হাত ধরে তিনি বলেছিলেন, দাদা, আমি তো মারা যাচ্ছি,

আপনি কথা দেন যে দেশটাকে স্বাধীন করে যাবেন।

স্বাধীনতা দিবস, তুমি

মুহম্মদ কবীর সরকার(Mahdi Kaabir)

স্বাধীনতা দিবস,তুমিই স্বাধীন

আজ কেহ নেই তোমার অধীন।

বদলে গেছে ৭১আর আজকের দিন।

যে যার রাজত্বের রাণী

স্বাধীনতা দিবস তুমি

চৌয়াল্লিশ বছর পূর্বে তোমাকে

এনেছিলাম বুকের রক্ত দিয়ে লিখে।

জায়গা দিয়েছিলাম এই বুকে।

শত প্রাণ শত আঘাত ভুলে,

তোমার ঘরেও যে পরাধীনতা

মারামারি প্রাণ হীন নাশকতা

ওগো মোর প্রিয় স্বাধীনতা।

তবে তুমি কেন আসলে?

স্বাধীনতা দিবস তুমি

তোমার লগনে ও কাঁপছে ভূমি

তুমি যে এসেছ ভুলে যায় আমি।

একটি পতাকা পেলে

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button