অনলাইন

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম | অনলাইনে আবেদন ফি জমা দেওয়ার পদ্ধতি

ইলেকট্রনিক্স পাসপোর্ট (e-passport) বাংলাদেশ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর আবেদন করা যাবে. আবেদন করার পর ই পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার পরে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করা যাবে. ই-পাসপোর্ট এর মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের ভ্রমণ করা যাবে. তিন ভাবে ই পাসপোর্ট করা যায় এবং পাঁচ বছর 10 বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করা যায়. ই-পাসপোর্ট অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার পরে ফি জমা দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাসপোর্ট অফিসে জমা দিয়ে ই-পাসপোর্ট সম্পন্ন করা যাবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের পর সংগ্রহ করা যাবে.

সুতরাং আপনি যদি অনলাইনে কিভাবে পাসপোর্ট করা যায় তা অনুসন্ধান করে থাকেন তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য প্রযোজ্য থাকবে এবং আপনি জানতে পারবেন ই-পাসপোর্ট কি?. কিভাবে ই পাসপোর্ট করা যায়?. ই-পাসপোর্ট কত বছর মেয়াদী হবে, ই-পাসপোর্ট কয় বছর পরে করা যাবে, এই পাসপোর্ট করার নিয়মাবলী, ই-পাসপোর্টে ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

ই-পাসপোর্ট কি?.

ই-পাসপোর্ট পুরো নাম হচ্ছে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট। ই-পাসপোর্ট বলতে বুঝায় সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত একটি ভ্রমণ নথিপত্র। এই ভ্রমণ নথিপত্র যার নাগরিককে পরিচয়দানকারী হিসাবে বিদেশে বহন করে থাকে। ই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে যে কোনো যোগ্য নাগরিক যেকোনো দেশে ভ্রমণ করতে পারেন এবং বৈধ কাগজপত্র ও পরিচয় পত্র হিসাবে ভ্রমণ করতে পারেন। ই পাসপোর্ট এর অনেক ঝামেলা কম এবং অনলাইনের মাধ্যমে করা যায়। এক কথায় বলা যেতে পারে ই-পাসপোর্ট হচ্ছেন নতুন যুগের নিরাপদ পাসপোর্ট।

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

বর্তমানে বাংলাদেশী পাসপোর্ট চালু হয়ে গেছে এবং আপনি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন এবং ই পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন। তবে আপনাকে জানতে হবে কিভাবে ই পাসপোর্ট করতে হয়। নিচে পাসপোর্ট করার নিয়মাবলী তুলে ধরা হলো। সুতারাং নিচের নির্দেশাবলী ধাপে ধাপে অনুসরণ করুন এবং ই পাসপোর্ট এর আবেদন পূরণ করুন।

প্রথমত: ই পাসপোর্ট এর আবেদন করতে ওয়েবসাইটে (www.epassport.gov.bd) লগইন করুন

দ্বিতীয় ধাপঃ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন (Directly to online application) ক্লিক করতে হবে।

তৃতীয় ধাপে: আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা, জেলা ও থানার নাম নির্বাচন করে ক্লিক করুন।

চতুর্থ ধাপে: ব্যক্তিগত পূর্ণাঙ্গ তথ্য পূরণ করে ফর্মটা সাবমিট করুন।

পঞ্চম ধাপে: মেয়াদ ও পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যা অনুযায়ী ফি প্রদান করুন।

ষষ্ঠ ধাপে: পাসপোর্ট ফি প্রদান করার পর আপনারা আবেদনটি পাসপোর্ট কার্যালয়ে সার্ভারে চলে যাবে।

সপ্তম ধাপে: তারপর পরিচয় পত্রের সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য পাসপোর্ট অফিসে চলে যান।

শেষ ধাপে: ই-পাসপোর্ট প্রস্তুতি এরপর আবেদনকারীকে জানানো হবে। নতুবা অনলাইনে চেক করতে পারবেন এবং রিসিভ কপি তে পাসপোর্ট গ্রহণের সময় প্রদান করা হবে। সুতরাং আবেদনকারী নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হয় ই-পাসপোর্ট গ্রহণ করতে।

ই পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার পদ্ধতি

ই পাসপোর্ট আবেদন অনলাইনে সম্পন্ন করার পর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করতে হবে তারপর রিসিভ কপি পাসপোর্ট সংগ্রহের তারেক প্রদান করা হবে। কিন্তু ই-পাসপোর্ট অনলাইনে আবেদন করার পর ই পাসপোর্ট ফি কিভাবে জমা দিবেন সে পদ্ধতি জানা দরকার। সুতরাং নিচে ই পাসপোর্ট প্রদান করার ফি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী তুলে ধরা হলো:

প্রথম ধাপ: অনলাইনে চালান করার পর অটোমেটিক চালানোর সিস্টেম বাংলাদেশ (Automated challan System Bangladesh) ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

দ্বিতীয় ধাপঃ পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট ফি তে ক্লিক করুন। আপনার সামনে একটি উইন্ডো চলে আসবে।

তৃতীয় ধাপঃ এখান থেকে প্রথমে পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যা বাছাই করতে হবে. তারপর পাসপোর্ট এর মেয়াদ ও ডেলিভারি ধরন বাছাই করুন. স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকার পরিমাণ দেখাবে. তারপর নিচে থেকে ওকে বাটনে ক্লিক করুন.

চতুর্থ ধাপঃ এবার পাসপোর্টধারীর ফি পরিশোধ করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনাক্তকরণ নাম্বার, নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার লিখুন। যদি ইমেইল নাম্বার থাকে তাহলে লিখতে পারেন

এছাড়াও মনে রাখতে হবে যে, জাতীয় পরিচয় পত্র দ্বারা পাসপোর্ট এর আবেদন করা হয় অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দিবেন। যাদের বয়স 18 বছরের নিচে অর্থাৎ এনআইডি কার্ড হয়নি তাদেরকে জন্ম সনদের সঠিক নাম্বারটা দিতে হবে।

সরকার কর্তৃক অর্থাত্ পাসপোর্ট অফিস কর্তৃক অনুমোদিত ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা যাবে।

রকেট, বিকাশ ও নগদ এর মাধ্যমে টাকা দিতে সোনালী ব্যাংকের সিলেট করুন। তাছাড়াও সোনালী ব্যাংকের অনলাইন একাউন্ট, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড থেকে পেমেন্ট করা যাবে।

এখন সেভ বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনাকে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয় এতে নিয়ে যাবে।

ধাপ 5: এখান থেকেই একাউন্ট অথবা ভিসা অথবা মাস্টার কার্ড অথবা আমেক্স কার্ড অথবা মোবাইল ব্যাংকিং অপশনে সিলেট করে পেমেন্ট করুন।

ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগবে

ই-পাসপোর্ট-এর তিন ধরনের ডেলিভারি আছে যেখানে আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর থেকে নির্ধারিত কর্মদিবস পর ই-পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে।

১.  রেগুলার: ২১ কর্মদিবস

২. এক্সপ্রেস: ১০ কর্মদিবসে

৩. সুপার এক্সপ্রেস: দুই কর্মদিবস

আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ই পাসপোর্ট ফি:

নিচে পৃষ্ঠা এবং বছর পেতে পাসপোর্ট এর  ফি আলাদা হয়ে থাকে। সুতরাং নিচে ধারাবাহিকভাবে প্রদান করা হলো এখান থেকে জেনে নিতে পারেন।

48 পৃষ্ঠা এবং 5 বছরের মেয়াদ সহ পাসপোর্ট

  • 21 দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারি: 4,025 টাকা
  • 10 দিনের মধ্যে এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 6,325 টাকা
  • সুপার এক্সপ্রেস 2 দিনের মধ্যে ডেলিভারি: 8,625 টাকা

48 পৃষ্ঠা এবং 10 বছরের মেয়াদ সহ পাসপোর্ট

  • 21 দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারি: 5,750 টাকা
  • 10 দিনের মধ্যে এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 8,050 টাকা
  • সুপার এক্সপ্রেস 2 দিনের মধ্যে ডেলিভারি: 10,350 টাকা

64 পৃষ্ঠা এবং 5 বছরের মেয়াদ সহ পাসপোর্ট

  • 21 দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারি: 6,325 টাকা
  • 10 দিনের মধ্যে এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 8,625 টাকা
  • সুপার এক্সপ্রেস 2 দিনের মধ্যে ডেলিভারি: 12,075 টাকা

 64 পৃষ্ঠা এবং 10 বছরের মেয়াদ সহ পাসপোর্ট

  • 21 দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারি: 8,050 টাকা
  • 10 দিনের মধ্যে এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 10,350 টাকা
  • সুপার এক্সপ্রেস 2 দিনের মধ্যে ডেলিভারি: 13,800 টাকা

অনলাইনে পাসপোর্ট ফরম পূরণ

অনলাইনে পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট ডিউটির ক্ষেত্রে যদি আপনি আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিতে চান তাহলে আপনাকে স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে আপনাকে ফরম পূরণ করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। যদি নিজেই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন ফরম পূরণ করতে চান তাহলে নিজের ল্যাপটপ অথবা বিপন্ন ইন্টারনেট সেবাদানকারী দোকান গুলোতে আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন

পরিশেষে বলা যায় যে ই-পাসপোর্ট একটি ভ্রমণ ভিত্তিক নথিপত্র যা বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে চালু করেছে এবং ই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের ভ্রমণ করা যাবে। ই-পাসপোর্ট পাঁচ থেকে দশ বছর মেয়াদী হয় এবং ই পাসপোর্ট করার নিয়মাবলী এবং ফি প্রদানের পদ্ধতি সহ সকল তথ্য আমরা এই পোস্টে আলোচনা করেছি। আশাকরি উক্ত আলোচনাটি বুঝতে পেরেছেন এবং ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেয়েছেন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button