বসন্তের রোমান্টিক কবিতা
পয়লা ফাল্গুন বাঙালিদের একটি ঐতিহ্যপূর্ণ দিন এবং প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে পহেলা ফাল্গুনের এক তারিখ হয়। বসন্তর প্রথম দিন পয়লা ফলো করলে প্রথম দিনকে পয়লা ফাল্গুন বলা হয়। এই দিনে প্রকৃতি নতুন ধারায় সাজিয়ে রঙ্গিত হয়ে শুরু করে সাজাতে। তাই পয়লা ফাল্গুন কি প্রত্যেক বছর পালন করা হয় দেখে তেমনি এই বছর পয়লা ফাল্গুন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০০২৩ সালের রোজ রবিবার।
সুতরাং অনেকেই পহেলা ফাল্গুনের বিপন্ন রোমান্টিক কবিতা অনুসন্ধান করেন এবং সেই কবিতা গুলি তাদের প্রিয়জনকে উপহার দিতে চান এবং সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার করতে চান। তাই পয়লা ফাল্গুন উপলক্ষে আমরা সকল রোমান্টিক কবিতা আমাদের এই সাইটের যুক্ত করা হয়েছে|
বসন্তের রোমান্টিক কবিতা:
অপেক্ষা শুধু তোমার” এই অবেলায় ফাগুনের বসন্ত বিকেলে ঐ নদীর তীরে বসে অপেক্ষা শুধু তোমার। সময় হলে তোমার বাড়ির দিকে তাকিয়ে চার দোকানে বসে অপেক্ষা শুধু তোমার! কেউ লাল, নীল ফুলের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজে, কিন্তু ফুলেদের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা শুধু তোমার। কলেজে গিয়ে সবেতে তোমায় খুঁজি কারণ অপেক্ষা শুধু তোমার! |
বসন্ত নিয়ে একটি বিখ্যাত কবিতা
বসন্ত নিয়ে একটি বিখ্যাত কবিতা রচনা করেছেন টুটুল দাস। তিনি কবিতার মাঝে বুঝিয়ে দিয়েছেন বসন্ত একটি নতুন ধারা এবং বসন্তের গুরুত্ব সম্পর্কে।
জন্মান্তর
–টুটুল দাস
একজন্ম মিথ্যে হলে
পরের জন্মে? শামুক হবো
চুপিসারে, নীল ছোবলে
পদ্ম প্রেমের রক্ত খাবো।
পদ্মবনে রূপসী পাড়াগাঁ
পাড়ার নাম? নেইকো মনে
গতজন্ম, বিষবিষানী ঘাঁ
পুড়লো শেষে এই ফাগুনে।
পোড়ার ছিল রাত্রিদিবস
জাগবে কেন? খুনির বেশে
খুন হয়েছে, কবির কি দোষ
এক জোনাকি ভালোবেসে?
জোনাকি যদি পড়ার ঘরে
বসন্ত নামায়? মেঘ বিকালে
প্রেম চাইনা, বৃষ্টির পরে
রাত্রি জাগা খুব সকালে।
সেই জন্মে সত্যি বলছি
প্রেমিকই হবো আবার আমি
সঙ্গে শুধু কবিতা রাখছি
নাইবা থাকো আবার তুমি।
বসন্ত নিয়ে নির্মলেন্দু দাসের কবিতা
নির্মলেন্দু দাস বসন্ত নিয়ে একটি কবিতা রচনা করেছেন এবং এই কবিতাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং রোমান্টিক।
আমার বসন্ত
– নির্মলেন্দু গুণ
এ না হলে বসন্ত কিসের? দোলা চাই অভ্যন্তরে, মনের ভিতর জুড়ে আরো এক মনের মর্মর, পাতা ঝরা, স্বচক্ষে স্বকর্ণে দেখা চাঁদ, জ্যোৎস্নাময় রাতের উল্লাসে কালো বিষ । এ না হলে বসন্ত কিসের ? গাছের জরায়ু ছিঁড়ে বেরিয়েছে অপিচ্ছিল বোধ, ওর মুখে কুমারীর খুন, প্রসূতির প্রসন্ন প্রসূন । কন্ঠ ভরে করি পান পরিপূর্ণ সে-পাত্র বিষের, চাই পূর্ণ শিশিরে নির্ঘুম । এ না হলে বসন্ত কিসের?
বসন্তের প্রেমের কবিতা
বসন্ত নিয়ে বেশকিছু প্রেমের কবিতা রয়েছে এবং বসন্ত কে যে ভালোবাসে এবং প্রেম করে সেই কবিতা লিখেছেন। তেমনি একটি কবিতা রয়েছে বসন্তের প্রেমের কবিতা আমার শহর এবং লিখেছেন প্রদীপ বলা।
আমার শহরঃ বসন্তের প্রেম
– প্রদীপ বালা
বসন্ত তবে এসেই গেল, বুঝলে ভায়া! একটা কুকুর শুঁকছে আমার পায়ের ধুলো চমকে উঠে পেছনে দেখি, কি বেহায়া! আমার হাতে আধখানা রোল, ঝুলছে নুলো ছ’টা পঁচিশ, পেটে তখন ছুঁচোর সেকি লাফ বসন্ত যদি এসেই থাকে তোর বাপের কি ছুটছে সবাই বাস ধরবে ট্রেন ধরবে উল্টোডাঙ্গার মোড়ে শুধু আমি একাকী… কী আর হবে বসন্ত এলে,ভিক্টোরিয়া ময়দান আর পার্কে শুধু ভীড় বাড়বে শীতে দেখিয়ে খেত সবাই,এখন মুখ লুকোবে ছাতার তলায়। আমারও সময়,বাস ছাড়বে। ছিল না কি বসন্ত আমারও,একটা দুটো… ছাতার তলায় ঘন হয়ে বসে পৃথিবীতে মুখ উত্তাপে আর উত্তাপে তোর বুকে ঘাম আর ঘ্রাণের ভেতর খুঁজিনি প্রেমের সুখ ? তবুও তো প্রেম এলো না,তার বদলে একতাল মাংস এল উঠে,চিকেন কষা কপাৎ করে গিলে ফেলে দেখি তোকে কোমরে বেশ মেদ জমেছে,বাসের সীটে বসা। ধুস শালা! বাস ছুটে যায় ধুলোর বেগে হাজার হাজার ধুলো তখন প্রেমের খেলা খেলতে থাকে, হাতে হাত রেখে সবাই পার হয়ে যায় রাস্তা ঘাটএই বেলা আমিই শুধু দাঁড়িয়ে থাকি, ভীড়ের ভেতর ছুটোছুটি যন্ত্রমানব,বসন্ত এসে গেছে সময় এসে লাথ মারে পেছনে, “ভাগ শালা সময় নেই প্রেম মারাতে গেছে!” হটাত করেই বাসটা এসে গেল আমারও তখন ঘরে ফেরার তাড়া বাসের ধোঁয়ায় উড়িয়ে নিয়ে গেল তোমার আমার চোখের ইশারা সে ইশারার একটুখানি রেশ বুকের ভেতর সযত্নে রাখি, হটাত হটাত ঠোকর মেরে ফেরে বাসে উঠে বসন্তকে পেছনে ফেলে দেখি আধখানা প্রেম ঝুলে আছে উল্টোডাঙ্গার মোড়ে!
বসন্ত নিয়ে ফুলের কবিতা
বসন্ত নিয়ে ফুলের কিছু কবিতা রয়েছে এবং এই কবিতা গুলি খুবই রোমান্টিক। অনেকে বসন্ত নিয়ে ফুলের কবিতা খুঁজেন এবং পেতে চান। বসন্ত নিয়ে ফুলের একটি কবিতা লিখেছেন সুব্রত পাল।
থেকো, বসন্তসন্ধ্যায়
– সুব্রত পাল
॥ ১ ॥
যদি বসন্ত পলাশ খোঁজে, খুঁজুক। তুমি খুঁজো না
রাঙামাটির পথে হাঁটতে ইচ্ছে করলে, হেঁটো না
শুধু আমাকে খুঁজো
আমি তো দুরন্ত ফাল্গুন গোটা গায়ে মেখে
তোমার জন্য বসে আছি
মনে মনে মাদল বাজাচ্ছি আর
গোধূলির রঙ দেখছি দিগন্তে
যদি বসন্ত তোমাকে ডাকে, ডাকুক। তুমি যেয়ো না
আঙুল ছুঁতে ইচ্ছে করলে, ছুঁয়ো না। কথা বোলো না
শুধু আমাকে ছুঁয়ো
আমি তো পাতায় পাতায় লুকিয়ে রেখেছি
সব ঢেউ, দ্বীপ, দ্বীপপুঞ্জ
গহন অরণ্য হয়েছি
কুয়াশায় সেজেছি কখনো
তবু যদি বসন্ত আসে তোমার কৃষ্ণচূড়া ডালে
আর কোকিল ডাকে, তবে অপেক্ষা কোরো।
আমি আবির নিয়ে আসছি, থেকো…
॥ ২ ॥
নিজেকে দেখাতে গিয়ে শুধু তোমাকেই দেখছি
এই বসন্তসন্ধ্যায়
সমস্ত আড়াল, অভিমান, সমস্ত সীমারেখা
উপেক্ষা করে আজ তোমারই সামনে এসেছি
এই আনমনা মন, মনের ভেতর তরঙ্গ
এই ভ্রূভঙ্গি, এই ঠোঁটের উচ্চারণ
সব যদি আলাদা মনে হয়
এসো, তাহলে স্পর্শে বুঝি দুরন্ত অস্থিরতা
এসো, ক্রমাগত আঁকড়ে ধরি
আর ক্রমাগতই বাঁচার চেষ্টা করি
হে আমার কাঙ্খিত প্রেম
আগে তো বলো নি কখনো
ভালোবাসায় এত কষ্ট থাকে
এত আলোড়ন, এত নিঃসঙ্গতা
কখনো কিছু তো বুঝে নিও
কিছু অনুচ্চারিত শব্দ, কিছু সমুদ্র ফেনায়
ছিটেফোঁটা যন্ত্রণা, বুঝে নিও
আজ পূর্ণিমা নাকি অমাবস্যা
আকাশে চাঁদ আছে কি নেই, কিচ্ছু জানি না আমি
শুধু বসন্ত জানি আর জানি তোমাকে
তাই তো তোমারই সামনে এসেছি
তোমাকেই দেখছি
দেখছি ভরসার মত করে, কান্নার মত করে
স্পর্ধার মত করে, ইচ্ছের মত করে
শুধু তোমাকেই দেখছি
অথচ আমি নিজেকেই দেখাতে এসেছিলাম
এই বসন্তসন্ধ্যায়।
উপসংহার:
বসন্ত বাঙ্গালীদের একটি ঐতিহ্যধারা। প্রত্যেক বছর একবার করে বসন্ত আসে এবং প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলে ফুল এবং নতুন পাতা মাধ্যমে। বসন্তের রোমান্টিক কবিতা গুলি অনেকে পছন্দ করেন এবং কবিদের রোমান্টিক কবিতা গুলি অনুসন্ধান করেন এবং সেই কবিতা গুলি ডাউনলোড করতে চান। এজন্য আমরা বসন্ত উপলক্ষে যতগুলো রোমান্টিক কবিতা রয়েছে সকল গুলি এই পোস্টে সাজিয়েছি