পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী, টিকিটের মূল্য, ভাড়ার তালিকা ও ছুটির দিন
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাংলাদেশের একটি আন্তঃনগর ট্রেন যা চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে সিলেট রেল স্টেশন পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করেন। এই তিনটির ট্রেন নাম্বার হচ্ছে 719 ও 720। ইটিটি চট্টগ্রাম টু সিলেট পথে প্রথম আন্তঃনগর ট্রেনের ছবি পাহাড়ি এক্সপ্রেস নামে উদ্বোধন হয় 16 ই মে ১৯৮৬ সালে। এই তিনটি চট্টগ্রাম টু সিলেট 377 কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেন এবং ট্রেনটিতে কয়েকটি সিটের ব্যবস্থা রয়েছে. চট্টগ্রাম টু সিলেট রুটে চলাচলকারী যতগুলো ট্রেন রয়েছে তার মধ্যে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি অন্যতম.
সুতরাং আপনি যদি পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান অর্থাৎ ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়ার তালিকা, বিরতি স্থান, সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য তথ্য তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে। এখান থেকে আপনি ট্রেনটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের সংক্ষিপ্ত বিবরন
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি একটি আন্তঃনগর ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রেল স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করেন। যদি কেউ এই তিনটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ চান বা বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে নিচে থেকে জানতে পারবেন.
- পরিষেবা ধরন: আন্তঃনগর ট্রেন
- প্রথম পরিষেবা: ১৬ মে ১৯৮৬; ৩৫ বছর আগে
- বর্তমান পরিচালক: পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে
- যাত্রাপথ শুরু: চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন
- শেষ: সিলেট রেলওয়ে স্টেশন
- ভ্রমণ দূরত্ব: ৩৭৭ কিলোমিটার (২৩৪ মাইল)
- রেল নং: ৭১৯/৭২০
- যাত্রাপথের সেবা শ্রেণী: শোভন চেয়ার, এসি চেয়ার, এসি কেবিন
- আসন বিন্যাস; আছে
- ঘুমানোর ব্যবস্থা : আছে
- খাদ্য সুবিধা: আছে
- বিনোদন সুবিধা: আছে
- মালপত্রের সুবিধা আছে
- কারিগরি গাড়িসম্ভার: ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত অত্যাধুনিক ১৪ টি পিটি ইনকা কোচ নিয়ে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস চলাচল করে। ২ টি গার্ড ব্রেক+খাবার গাড়ি+শোভন চেয়ার, ১ টি পাওয়ার কার, ২ টি এসি চেয়ার, ১ টি এসি কেবিন ও ৮ টি শোভন চেয়ার।
- ট্র্যাক গেজ: মিটারগেজ
- রক্ষণাবেক্ষণ: সিলেট ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আন্তঃনগর ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে সিলেট পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করেন এবং তিনটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্থাৎ চট্টগ্রাম থেকে নয়টায় ছেড়ে যান এবং 18: ০০ পৌঁছান। অপরদিকে সিলেট থেকে ছেড়ে যান 10:15 এবং চট্টগ্রামে পৌঁছান 19:35।
ট্রেন নাম্বার | উৎস স্থান | ছাড়ার সময় | পৌঁছানোর স্থান | পৌঁছানোর সময় | সাপ্তাহিক ছুটি
|
৭১৯ | চট্টগ্রাম | ০৯:০০ | সিলেট | ১৮:০০ | সোমবার |
৭২০ | সিলেট | ১০:১৫ | চট্টগ্রাম | ১৯:৩৫ | শনিবার |
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট মূল্য ও ভাড়ার তালিকা
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রেল স্টেশন পর্যন্ত 377 কিলোমিটার চলাচল করেন। এই তিনটি চারটি আসন রয়েছে এবং প্রত্যেকটি আসনেই না ভালা আলাদা আলাদা রয়েছে। আপনি সামর্থ্য অনুযায়ী আসুন পছন্দ করে টিকিট করা করতে পারেন। তবে আপনি যদি আসনগুলোর নাম ও ভাড়ার তালিকা জানতে চান তাহলে নিচে থেকে জানতে পারবেন.
আসন বিভাগ | টিকেটের মূল্য (১৫% ভ্যাট) |
শোভন চেয়ার | ৫০৫ টাকা |
স্নিগ্ধা | ৯৬৬ টাকা |
এসি সিট | ১১৫৬ টাকা |
এসি বার্থ | ১৭৮১ টাকা |
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের বিরতি স্টেশন ও সময়সূচী
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিয়মিত ছুটির দিন বাদে চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রেল স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করেন। তবে ট্রেন চলাচল পথে কতিপয় রেলস্টেশনে বিরোধী প্রদান করেন এবং কতটুকু সময় বিরতি প্রদান করেন। আপনি যদি বিরতি স্টেশনগুলোর নাম ও সময় জানতে চান তাহলে নিচের তালিকা থেকে জানতে পারবেন.
বিরতি স্টেশন নাম | ছাড়ায় সময় | পৌছানোর সময় |
ফেনী | ১০ঃ৩১ | ১৭ঃ৫০ |
নাঙ্গলকোট | ১১ঃ০৪ | ১৭ঃ২১ |
লাকসাম | ১১ঃ২৫ | ১৭ঃ০০ |
কুমিল্লা | ১২ঃ০৫ | ১৬ঃ৩২ |
কসবা | ১২ঃ৪৭ | ১৫ঃ৪২ |
আখাউড়া | ১৩ঃ২০ | ১৫ঃ১০ |
হরষপুর | ১৩ঃ৫৫ | ১৪ঃ১৯ |
নওয়াপাড়া | ১৪ঃ১৯ | ১৩ঃ৪০ |
শায়েস্তাগঞ্জ | ১৪ঃ৪৫ | ১৩ঃ১২ |
শ্রীমঙ্গল | ১৫ঃ২৬ | ১২ঃ২৯ |
ভানুগাছ | ১৫ঃ৪৯ | ১২ঃ০২ |
শমসের নগর | ১৬ঃ০০ | ১১ঃ৫৫ |
কুলাউড়া | ১৬ঃ২৬ | ১১ঃ২৪ |
মাইজগাঁও | ১৭ঃ০৮ | ১০ঃ৫৩ |
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস সাপ্তাহিক ছুটির দিন
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সপ্তাহের সোমবার ও শনিবার বাদে নিয়মিত চলাচল করে থাকেন। এই টিমটি চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রেল স্টেশন পর্যন্ত সপ্তাহে 5 দিন অর্থাৎ শনিবার বাদে চলাচল করে।
খাওয়ার ব্যবস্থা পাহাড়িকা এক্সপ্রেস
এই আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে খাওয়ার ব্যবস্থা সুবিধা রয়েছে. সুতরাং ট্রেন কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সুবিধার্থে একটি খাবারের কেবিন রেখেছেন যেখানে যাত্রীগণ সহজে খেতে পারবেন. তবে যে সমস্ত খাওয়ার এই ট্রেনের কেবিনে পাওয়া যায় তা হল: বার্গার, কেক, স্যান্ডউইচ, পেটিস, রোল, পারুটি, চা-কফি, কাটলেট, সিদ্ধ ডিম, চিকেন কাবাব, নানা ধরনের পানি ও মিনারেল ওয়াটার. সুতরাং এখান থেকে আপনি এছাড়াও আরও সুবিধা পাবেন দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিন.
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কাটার স্থান
আন্তঃনগর ট্রেনটির ট্রেনের টিকিট যেখান থেকে পাওয়া যাবে তার একটি বর্ণনা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
- দেশের সকল টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটা যাবে
- টেনের ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কাটা যাবে (www.esheba.cnsbd.com)
- *১৩১# নম্বরে ডায়াল করে এসএমএস এর মাধ্যমে টিকিট বুক করা যাবে.
- টিকিটের জন্য কনফার্মেশন মেসেজ পাঠানো হবে, তা যাত্রা ন্যূনতম আধাঘন্টা আগে, সংশ্লিষ্ট রেলস্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট প্রিন্ট করতে হবে
- তবে যাত্রা দশদিন পূর্ব থেকে অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাচ্ছে দেশের যেকোন কম্পিউটারাইজড টিকিট কাউন্টারে এবং ওয়েবসাইটে.
ট্রেনের বগি সংখ্যা পাহাড়িকা এক্সপ্রেস
আজ আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব এই ট্রেনের মোট বগি সংখ্যা এবং কি কি বগি রয়েছে.
- এই ট্রেনটিতে মোট বগি রয়েছে ১৬টি.
- একটি খাবার বগি রয়েছে
- একটি পাওয়ার কার বগি রয়েছে
- ট্রেনটিতে খাবারের বগির মধ্যে নামাজের জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ রয়েছে
- এবং ট্রেনের মাঝামাঝি জায়গায় খাবারের বগিটি রয়েছে
অন্যান্য সুবিধাদি
- আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে নামাজের জন্য ব্যবস্থা আছে
- প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে কর্তব্যরত গার্ডের কাছে
- প্রত্যেক বগিতে একজন করে গাইড থাকার ব্যবস্থা আছে। তবে তারা যাত্রীদের সেবা, প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ট্রেনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
- যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে জানালার পাশে এ্যালুমিনিয়ামের শাটার। ট্রেনে ভ্রমণকালে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন – ট্রেনের দরজা-জানালায় না বসা, ট্রেনের ছাদে না ওঠা, ইঞ্জিনে না চড়া। ঘনবসতি বা বস্তি এলাকাতে ট্রেন চলার সময় জানালার শাটার লাগিয়ে দেয়া।
- এসি কেবিন ছাড়া শোভন বগিতে স্ট্যান্ডিং টিকেট কাটার সুবিধা রয়েছে। মোট বরাদ্দকৃত টিকেট বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর স্ট্যান্ডিং টিকেট দেয়া হয়। স্ট্যান্ডিং টিকিটের মূল্য সিটিং টিকেটের সমান এবং সাথে সাধারণ টিকেটের মতই পণ্য নেয়া যায়।
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস মালামাল পরিবহন
- একজন শীতাতপ শ্রেণীর যাত্রী ৫৬ কেজি, প্রথম শ্রেণীর যাত্রী ৩৭.৫ কেজি, শোভন শ্রেণীর যাত্রী ২৮ কেজি এবং সুলভ ২য় শ্রেণীর যাত্রী ২৩ কেজি মালামাল বিনা ভাড়ায় সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন।
- অতিরিক্ত মালামাল মাশুল পরিশোধ করে তা লাগেজ হিসেবে তার নিজ গন্তব্যে নিতে পারেন। বড় স্টেশনগুলোতে লাগেজ বুকিংয়ের জন্য আলাদা কাউন্টার রয়েছে।
- লাগেজ বহনের জন্য ট্রলির ব্যবস্থা আছে।
- অসুস্থ ব্যাক্তিদের বহনের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা আছে
উপসংহারে বলা যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রুটে চলাচলকারী যতগুলো ট্রেন রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম। এটি একটি আন্তঃনগর ট্রেন এবং এটি সপ্তাহে পাঁচদিন চলাচল করে থাকেন। টেনটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন। আজ আমরা এখানে ট্রেনটির বিস্তারিত তথ্য ও সময়সূচী, ভাড়ার তালিকা, সাপ্তাহিক ছুটির দিন, বিরতি স্থানও সময়সূচী, খাবারের তালিকা ও টিকিট কাটার স্থান সকল তথ্য তুলে ধরেছি।