উৎসব

পহেলা বৈশাখের কবিতা | বাংলা নববর্ষের কবিতা সমগ্র

পহেলা বৈশাখের কবিতা সমগ্র যারা অনুসন্ধান করেন তাদের জন্য আমাদের এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখানে পহেলা বৈশাখ এর সকল কবিতা বা কবিতা সমগ্র আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব যা আপনি এখান থেকে সহজেই সংগ্রহ করতে পারবেন।

তবে পহেলা বৈশাখের কবিতা পাওয়ার জন্য আপনি ইন্টারনেটে সার্চ করতে পারেন নতুবা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে ভিজিট করে শুরু করতে পারেন। পহেলা বৈশাখের এই কবিতাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা পয়লা বৈশাখের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। আজ আমরা এখানে পহেলা বৈশাখ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কবিতা ও কবি সাহিত্যিক কর্তৃক রচিত কবিতা গুলো নিচে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করব।

পহেলা বৈশাখ নিয়ে কবিতা

পহেলা বৈশাখ নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা যা আপনাকে পয়লা বৈশাখের ইতিহাস ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দিবে। আসুন কবিতাগুলি নিচে থেকে দেখেনি.

বৈশাখের মেলাতে

ঘুরতে ফিরতে

উঠতে বসতে

ধরতে ছাড়তে ,,,,

দেখি কত যুবতী

হাসছে গাইছে

কেনাকাটা করছে

খাচ্ছে দাচ্ছে

কোমড় দুলিয়ে হাটছে !!””

লাল পাড়ে সাদা শাড়ি

ছেলেদের নজর কাড়ি

এ যেন রসের হাড়ি

নয় কোন বাড়াবাড়ি !!””

ছেলেরাও কম না

টিএসসি রমনা

সারাদিন কাটিয়ে

যায় মেয়ে পটিয়ে !!””

বছর ঘুরে এলো আবার প্রহেলা বৈশাখ

বাঙ্গালী তাই সেজেছে আজ নববর্ষের সাজ !””

জাতিভেদ ভুলে গিয়ে এক কাতারে তারা

বর্ষবরনের আনন্দে হয়েছে দিশেহারা !!””




পান্তা ইলিশ, পিঠাপুলি আর বৈশাখী মেলায় ‘’

নাচে গানে উল্লাসে মঙ্গল শোভাযাত্রায় ;’’’’

হাল খাতার রঙে রঙিন বাজারে দোকান

একই কন্ঠে তারাও গাইছে সাম্য মৈত্রের গান !!””




এসো তাই ভুলে যাই জাতি বর্ণ বিদ্বেষ,,,

সারা বছর মিলেমিশে থাকবো মোরা বেশ !!”””


পহেলা বৈশাখ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের কবিতা

আপনি যদি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পয়লা বৈশাখ কবিতাটি অনুসন্ধান করেন এবং সংগ্রহ করতে চান তাহলে এখান থেকে শুরু করতে পারেন

এসো এসো এসো হে বৈশাখ

তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষের দাও উড়ায়ে,,

বৎসরের আবর্জনা দুর হয়ে যাক

যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,

অশ্রু বাষ্প সুদূরে মিলাক !!””




মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা

অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা

রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,,,,

আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ

মায়ার কুজ্মটিজাল যাক দূরে যাক !!””

পহেলা বৈশাখের ছন্দ কবিতা

পহেলা বৈশাখের কবিতা সবার কাছে প্রিয়। তাই অনেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কবিতা পড়তে চান এবং অপরকে পড়ে শুনাতে জান। যারা কবিতা ভালোবাসেন এবং পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কবিতা আবৃত্তি করতে চান তাদের জন্য নিচে পহেলা বৈশাখের ছন্দ কবিতা রয়েছে যা এখান থেকে দেখে নিতে পারেন

বাজে ঢোল বাজে ঢাক

ঐ এলো বৈশাখ !!””

মেলা হবে খেলা হবে

হবে কবি গান,,,,

বৈশাখে বাঙালির নাচে মন প্রাণ !!””

মন নাচে প্রাণ নাচে

হাসে কবি গুরু

ঝড় এলে বুক কাঁপে

ভয়ে দুরু দুরু !!”””

বৃষ্টি বিহীন, বৈশাখী দিন

দমকা বায়ে, নূপূর পায়ে

যখন আসে, গন্ধ ভাসে !!”””

পাকা আমের কালো জামের

সঙ্গে লিচু, আরো কিছু

ফলের সাথে সবাই মাতে !!”””

আসলে ঝড়, কন্ঠ স্বর

হয়রে ভারী, তবুও আড়ি

ভাঙে ঘর, ভাঙে চর

কান্না বাড়ে, নদীর পাড়ে !!”””

পহেলা বৈশাখের বৈশাখী গান কবিতা

যারা পহেলা বৈশাখের কবিতা কে ভালবাসেন এবং পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বৈশাখী গান কবিতা অনুসন্ধান করেন তাদের জন্য নীচের কবিতাটি। কবিতা আবৃত্তি সবার কাছে প্রিয় যদি হয় বৈশাখী কবিতা।

বৈশাখী গান গেয়ে

এ কে আজাদ




বৈশাখ এলো ক্ষিপ্ত বেগে

সিঁদুর মেঘের গায়,,

বৈশাখ এলো উগ্রতা নিয়ে

কৃসনো মেঘের নায় !!””




বৈশাখ এলো কাল বৈশাখীর

হাওয়ায়-হাওয়ায় ধেয়ে,,

বৈশাখ এলো বাউলের বেশে

বৈশাখী গান গেয়ে !!””



উচ্ছ্বাসের এই দিনে নবীন

ছড়াও প্রেমের বার্তা ,,

তোমরা জাতির ধরবে হাল

আর হবে দেশের কর্তা !!””




শোষণ যুলুম রুখে দাড়াও

তাড়াও দুখের দিন ,,

সব বেদনা ভুলে বাজাও

হেথায় সুখের বীণ !!””



এদেশ আমার জন্মভূমি

এদেশ আমার প্রাণ ,,

কাঁদলে কেউ দুখে

পড়ে হৃদয় সুতোয় টান !!””



পুরোনো সব দুঃখ ভুলে

ফিরে এলো প্রহেলা বৈশাখ,,

সব ভেদাবেদ ভুলে বাজাও

ন্যায় শাসনের হর্ষ !!””


বাংলা নববর্ষের কবিতা সমগ্র

যারা বাংলা নববর্ষের কবিতা সমগ্র সংগ্রহ করতে চান বা অনুসন্ধান করেন তাদের জন্য নববর্ষের কবিতা সমগ্র এখানে সংযুক্ত করা আছে.

পহেল বৈশাখের নতুন প্রভাতে

পাখিরা গাইছে গান ,,

আপন বেগে বহিছে নদী

শোন নদীর কলতান !!”””



প্রভাতে সোনার বরণ রবি

উঠিয়াছে পূর্ব গগনে ,,

মাধবী, মালতী, টগর, করবী

ফুটিয়াছে বনে বনে !!””’




ফুলে ফুলে উড়ে প্রজাপতি

সমীরণ সৌরভ ছড়ায় ,,

মাতিয়া উঠে সবাকার প্রাণ

খুশিতে হৃদয় ভরে যায় !!””



পহেলা বৈশাখের এই নবীন প্রভাতে

প্রাণে জাগুক নব নব আশা ,,

পহেলা বৈশাখের আজিকে সবাই

নিও মোর প্রীতি ও ভালবাসা !!””

বাংলা নববর্ষের কবিতা

আপনি কি বাংলা নববর্ষের কবিতা অনুসন্ধান করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য এবং প্রিয় মানুষকে গিফট করার জন্য বাংলা নববর্ষের সেরা কবিতা রয়েছে যা আপনাকে মুগ্ধ করবে।

বৈশাখের মেলাতে

ঘুরতে ফিরতে

উঠতে বসতে

ধরতে ছাড়তে ,,,,

দেখি কত যুবতী

হাসছে গাইছে

কেনাকাটা করছে

খাচ্ছে দাচ্ছে

কোমড় দুলিয়ে হাটছে !!””

লাল পাড়ে সাদা শাড়ি

ছেলেদের নজর কাড়ি

এ যেন রসের হাড়ি

নয় কোন বাড়াবাড়ি !!””

ছেলেরাও কম না

টিএসসি রমনা

সারাদিন কাটিয়ে

যায় মেয়ে পটিয়ে !!””

পয়লা বৈশাখের কবিতা

পহেলা বৈশাখের কবিতা যা আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা লিখেছেন এই কবিতাটি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে খুবই জনপ্রিয় এবং সবার গ্রহণযোগ্য

এলো পহেলা বৈশাখ (গীতিকবিতা)

– আবু জাফর বিঃ

বাঙালির বর্ষবরণে নানা আয়োজনে;

বাজলো ঢোল আর ঢাক,

প্রকৃতির খেলায় নাগর দোলায়

এলো পহেলা বৈশাখ।

আজ বর্ষবরণের প্রথম দিনে

বাঙ্গালীর নববর্ষ উৎসবের ক্ষণে;

করিবে নৃত্য, কবিতা আবৃতি,

বাঙালির কৃষ্টি করিবে সৃষ্টি।

ভুলে জ্বরা-ক্লান্তি বাঙালি সংস্কৃতি;

শ্রদ্ধার সাথে হৃদয়ে গাঁথা থাক।

দারিদ্র্যের নিস্পেষণে জর্জরিত,

আনন্দ থেকে কেউ নয় বঞ্চিত।

লালপেড়ে শাড়ি, কানে দুল,

কিশোরীর খোপায় পরে গাঁদাফুল।

আনন্দ উল্লাসে বৈশাখী মেলায় এসে;

সব দুঃখ ধুয়ে-মুছে যাক।

আজ গ্রাম-গঞ্জে বয়ছে বৈশাখী মেলা

ভাসিয়ে সুখের ভেলা;

মাটির পুতুল, কানের দুল,

পাটের ছিকা, তাল পাতার পাখা,

বাঁশের বাশিঁ সোলার পাখি,

শামুকের মালা গেঁথে রাখ।

শহর-নগরের মুক্তাঙ্গনে,

কবিতা পাঠ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে;

ঢাকায় রমনার বটমূলে,

সবাই নাচবে গায়বে প্রাণ খুলে।

ইলিশ-ভাজা আর পান্তা-ভাত,

নববর্ষের রেওয়াজ হয়ে থাক।

বাঙালির বর্ষবরণে নানা আয়োজনে;

বাজলো ঢোল আর ঢাক,

প্রকৃতির খেলায় নাগর দোলায়,

এলো পহেলা বৈশাখ।

বাংলা পহেলা বৈশাখের ছোট কবিতা

যারা বাংলা পহেলা বৈশাখের বা বাংলা নববর্ষের ছোট কবিতা অনলাইনে অনুসন্ধান করেন, তাদের জন্য পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কয়েকটি ছোট কবিতা রয়েছে যা খুবই জনপ্রিয় এবং পহেলা বৈশাখের ছোট কবিতা হিসেবে খ্যাত.

বৃষ্টি বিহীন, বৈশাখী দিন

দমকা বায়ে, নূপূর পায়ে

যখন আসে, গন্ধ ভাসে !!”””




পাকা আমের কালো জামের

সঙ্গে লিচু, আরো কিছু

ফলের সাথে সবাই মাতে !!”””




আসলে ঝড়, কন্ঠ স্বর

হয়রে ভারী, তবুও আড়ি

ভাঙে ঘর, ভাঙে চর

কান্না বাড়ে, নদীর পাড়ে !!”””




পহেলা বৈশাখ ছোট কবিতা ২

পহেল বৈশাখের নতুন প্রভাতে

পাখিরা গাইছে গান ,,

আপন বেগে বহিছে নদী

শোন নদীর কলতান !!”””




প্রভাতে সোনার বরণ রবি

উঠিয়াছে পূর্ব গগনে ,,

মাধবী, মালতী, টগর, করবী

ফুটিয়াছে বনে বনে !!””’




ফুলে ফুলে উড়ে প্রজাপতি

সমীরণ সৌরভ ছড়ায় ,,

মাতিয়া উঠে সবাকার প্রাণ

খুশিতে হৃদয় ভরে যায় !!””




পহেলা বৈশাখের এই নবীন প্রভাতে

প্রাণে জাগুক নব নব আশা ,,

পহেলা বৈশাখের আজিকে সবাই

নিও মোর প্রীতি ও ভালবাসা !!””

পহেলা বৈশাখের রোমান্টিক কবিতা

যারা পহেলা বৈশাখে রোমান্টিক কবিতা অনুসন্ধান করেন এবং সংগ্রহ করতে চান তারা নিশ্চিন্তে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। এ কবিতাটি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে খুবই রোমান্টিকতা পেয়েছে।

আবার এসেছে ফিরে বাঙালির ঘরে,

নতুন পহেলা বৈশাখ।




আজ শুধুই ভালোবাসার উজানে,

বাঙালির বর্ষবরণ নানা আয়োজনে;

রমণীরা আজ সেজেছে নতুন সাজে,

পায়ের নূপুর ঘুঙ্গুর বাজে।

নাচে হেলেদুলে গায়ছে প্রাণখুলে,

দেখে সবার চোখ জুড়িয়ে যাক।



লালপেড়ে শাড়ি কানে দিয়ে দুল,

চোখে কাজল খোপায় গাঁদা ফুল।

কামার, কুমোর, জেলে, তাতি,

হিন্দু, মুসলিম, বোদ্ধ, জাতি।

আনন্দ উল্লাসে বৈশাখী মেলায় এসে;

সব ভেদাভেদ ভুলে যাক।



বটের ছায়ায় রাখালের বাঁশি,

ফসলের মাঠে কৃষাণের হাসি।

পাকা ধানের মৌ-মৌ গন্ধ,

পাখির কলকাকলি সুরের ছন্দ।

বাতাসে ছড়াল সুগন্ধ মনে আনন্দ,

কৃষ্ণচূড়ার রং হৃদয়ে ছড়াক।



রমনার বটমূলে সকল শিল্পী মিলে

গান-নৃত্য করে সারাদিন ধরে,

পান্তা-ইলিশ খেয়ে বৈশাখী মেলায় গিয়ে;

বাঙালির ঐতিহ্যকে লালন করে।

গ্রাম-অঞ্চলে বিভেদ ভুলে,

সবাই একসাথে মিলে-মিশে থাক।



মাঠে সোনার ধান, জুড়াই প্রাণ

কৃষকের মুখে বৈশাখী গান,

মনে আজ আনন্দ ভুলে সব মন্দ,

নেইতো কারো মান-অভিমান।

দুপুরের খরাই বটের ছায়ায়,

সব জরা-ক্লান্তি ধুয়ে-মুছে যাক।




আবার এসেছে ফিরে, বাঙালির ঘরে,

নতুন পহেলা বৈশাখ।


বৈশাখের ছন্দা আখতার কবিতা

১) সেই বৈশাখ

ছন্দা আখতার

টের পাতার চিঠিখানা আজ এতোদিন পর সরব হলো!

মনের চিলেকোঠায় যে অক্ষরগুলো আবছা হয়ে উঠেছিলো ধীরে ধীরে-

অস্পষ্টতার জলছাপে ঢেকে গিয়েছিলো পান্তা ইলিশের হাতছানি-

আজ হঠাৎই তা ডাক-চিৎকার করে উঠলো যেন!

হৃদয়ের আঙিনা জুড়ে এলোমেলো ঝরা পাতারা বর্ণমালা সাজাতে লাগলো নিরব শব্দে-

কান পেতে দিলাম আমি কালের আবর্তে-

মনে হলো, এক টুকরো কালবৈশাখীর কান্না

ডানা ঝাপটাতে গিয়েও থমকে দাঁড়ালো মেঘের আয়নার আড়ালে!

আসলে বৈশাখ এখনও আসে-

তবে হাসে না কিছুতেই!

মাটির সানকিতে পান্তা আর কাঁচা লঙ্কারা মানচিত্র আঁকে-

ভেসে ওঠে কিছু আটপৌরে গল্প-

বৈশাখের খরতাপে পুড়ে খাঁক হয়ে যাওয়া হলুদ বিকেলেরা উঁকিঝুঁকি দেয় কখনোবা-

প্রলয় ওঠে হৃদয় তরঙ্গে-

সে প্রলয়ের তান্ডব অন্দরমহল থেকে বাইরে অবধি পৌঁছে যায় চকিতেই!

তালপাতার বাঁশির মেঠো সুর বাজে মিহি সুরে-

বুকের ভেতর!

পুতুল নাচের বাকহীন পদশব্দ আঁচড় কাটে আজও স্মৃতির জমিনে-

ধূসর থেকে ধূসরতম স্মৃতিগুলোও জেগে উঠতে চায় বিস্মৃতির মাঠে-

আমি মানা করি না-

উঠুক না জেগে-

তবু যদি এই বৈশাখে পাই সেই বৈশাখের দেখা!

পাবো না জানি-

তবুও খুঁজি কংক্রিটের এই নগরে-

ভাবনার চিলেকোঠায় একঝলক স্থিরচিত্রের মতো ভেসে ওঠে আমার সেই বৈশাখ- এই বৈশাখের ভিড়ে!


২) বর্ষবরণ

ড. রেজিনা আখতার

পৃথিবীর এ প্রান্তে রুদ্ররোষে ক্লান্ত পথিক

ঝরছে আগুনের লেলিহান শিখা

তবু আকাশে বাতাসে ঝংকৃত হবে

বর্ষবরণে প্রাণের নাচন

ঢোলঢাকের বাদ্য কীর্তন

বাঙালিপণায় যথা আয়োজন।

ইলিশ শুঁটকি বেগুন ভর্তা লংকা পেয়াজ পান্তা

যে ঘরে নেই কোনোই খাবার তার অসহায় প্রাণটা

নববর্ষের শুভদিনটিতে শুভকামনায় একটি প্রাণ

হোক মোদের সহযোগিতায় কিছু আহার্য দান।

ধরণীতে ক্ষণিক স্মৃতি

ক্ষণিকের জীবন মরণ

ক্ষুধার্ত অসহায়কে বাঁচাই

সাধ্যমত এক একজন।

শুভকামনায় নববর্ষের আগমন

বাঙালির আভিজাত্যে যুগযুগ লালন

আপামর বাঙালি সংস্কৃতির আবাহন

সকল দুঃখ জরা মলিনতা মুছে যাক

অতৃপ্তি গ্লানি না পাওয়ার যত বেদন

বিস্মৃতির অতলে হারাক

ভূবন ভরুক সদা আনন্দে অকারণ

নতুন প্রভাতে নতুন সৃষ্টিতে বর্ষবরণ

মানবতার সেবা হোক লক্ষ্য

জীবনের জন্য হোক জীবন।

 

৩) ঝিলিক জলের স্নিগ্ধ সু

শিউলি আখন্দ

শেষ বিকেলের সোনা রোদে

জলের ঝিলিক,

শিরীষ শাখায় প্রণয় মধুর

দুটো শালিক।

কাছেই গাছে ডাকছে  কোকিল কুহু কুহু

কলা পাতায় হাওয়ার দোলা আহা উঁহু।

বলছে কিছু?

বলছে কিছু 'টিউ' পাখিটা মান্দার ফুলে

মধু খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে দুলে দুলে?

কাঁচা আমের নতমুখী পাতার ডালে

দোয়েল পাখি লেজ উঁচিয়ে উড়ছে তালে,

বলছে কিছু?

বলছে কিছু ঘাস ফড়িং ও যেন উড়ে

খুশির হাওয়া এলো বুঝি ধুলো জুড়ে_

বর্ষ শুরুর বরণ আমেজ,

হেসে গেয়ে খেয়ে দিয়ে

নতুন সাজে শুভ্র সতেজ

হালখাতারই চিঠি নিয়ে,

বলছে কিছু?

বলছে যেন

সেইতো এলে...

সেইতো এলে...

এলেই তবে!

৪) হে বৈশাখ তুমি আসবে বলে

লায়লা আফিয়া

হে বৈশাখ, তুমি আসবে বলে মোরা

করেছি উচ্ছ্বসিত আয়োজন, 

পুরাতন জীর্ণ, জড়া পিছু ফেলে সব

আজ, করবো তোমায় বিচিত্র রূপে বরণ।

কেউবা মোরা সং সাজিব- ঢোলক বাদক

বেদে, বাউল ঝুঁটিআটা গেরুয়া সন্যাসী,

প্রকৃতির শ্রী নিকেতনে আরো বাজাবো

কৃষ্ণের সুরেলা বাঁশি।

যদিও আগমন তোমার কোলাহল মূখর

এলোমেলো প্রচন্ড ঘূর্ণিবায়,

তবুও করতে বরণ তোমায়

মোরা বসে রই অস্থির প্রতিক্ষায়।

যতই গর্জিয়া আসুক সেথা

কালো মেঘ সারি-সারি

মোরা করি না ভয়, নেত্র তুলে চেয়ে আছি

এসো, এসো হে ঝড় ঝটিকায় মত্ত রাণী।

হে বৈশাখ? তুমিতো জানো, ঝড় ঝঞ্ঝার পরে-ও তোমার তাণ্ডব ধ্বংস লীলার মাঝে

মোরা আবার গড়ে চলি সবি

নব উদ্দোগে ভরি,

জানি না, তবু কেন বার-বার ফিরে এসে

তুমি সংহার করো এই সুন্দর সৃষ্টি।

হে বৈশাখ, মিনতি করে বলছি তোমায়

এসো, শপথ করি একসাথে,

আর খেলবে না এমন নিষ্টুর খেলা

শ্যামল সুন্দর এই বাংলার মাঝে।

৫) শুভ নববর্ষ

সুলতানা রিজু

দরজা জানালা খুলে দাও সব আসতে দাও হাওয়া

উঠুক ভরে বুক ।

রোদের আর্শিতে দেখ তোমার মুখ।

রোদেলা আলোয় ভরে উঠুক তোমার চারিধার

দেখো নিজেকে নতুন করে আজ।

পুরোনোকে ঝেড়ে ফেলো।

নতুনকে তুলে নাও দু'হাতে তোমার,

নতুন আলোকে ভরে রেখো নিজেকে।

তাথেকে আমাদেরকেও দিও কিছুটা

সময়।

শুভ নববর্ষ

শুভ হোক এ নতুন বছর।

৬) বৈশাখ সমাচার

চমন আফরোজ চৌধুরী            

প্রচণ্ড দাহে উত্তপ্ত জনপদ

তৃষ্ণার্ত অসহায় জনগণ

ঈশান কোণে জমছে মেঘ

কালবৈশাখী ঐ এলো দেখ।

বেলির সুবাসে চারিদিক মৌ মৌ

গাছে গাছে আমের মুকুল ঝুলছে ঐ

আম-জাম-কাঁঠাল-লিচু বড়ই

সবই আজ হারিয়ে যাচ্ছে কই

আম-কাঁঠালি হারিয়েছে তার জৌলুশ

সব কিছু বড়োই অদ্ভুত!

কৃষকের মাথায় হাত

কালোবাজারিতে বাজার সয়লাব!

হারিয়েছে স্বাদ হারিয়েছে গন্ধ

সবই আজ বর্ণ থেকে বিবর্ণ!

৭) রঙের বৈশাখ

নূরূন নাহার পাপিয়া

লাল শাড়ি

খোঁপায় ফুল

নাকে নোলক

কানে দুল

হাতে চুড়ি

লম্বা আঁচল

দুলছে দুদোল দুদোল।

৮) একাকী স্নিগ্ধকর নিরবতা

নীলিমা নিগার

নিরবতা, নিজের সাথে নিজেরই সময় অসময়ের নিরবতা,

কিছুটা একাকী সময় তুলে আনে রাঙা বৈশাখি

আনন্দ, বার বার ফিরে আসে স্মৃতি অলিন্দে জেগে ওঠে স্মৃতিপটের শিশু শৈশব, কখনও হামাগুড়ি দিয়ে দুরন্তর কৈশোরী সময়,

রাতজাগার ভয়াবহ নির্জর ক্লান্তিটুকু পুরোপুরি মুছে দিয়ে

যায় এই সাগর বেলা, মুছে দেয় সম্পর্কিত অধ্যায়ের অমোঘ সুত্রগুলো কিছুটা সময়ের জন্য, আবারও নিরবধি নিরবতা, সংসারের মুলমন্ত্র দায়িত্বের নিগুঢ় বোঝার

অস্থিরতা, পাপপুণ্যের বিধিবিধানের কঠিন হিসাব,

নিরবতা, উদাসী মনটায় দিক হারিয়ে সৈকতের সীমানায়,

ভুলে যায় কর্ম কোলাহলময়ী নগর,

ভুলে যায় আত্মগ্লানি, আর কষ্টের মায়ামৃগ,

কিছুটা সময় প্রকৃতি আমার হোক

আর আমি প্রকৃতির, আর আমরা দুজনে সময়ের, আমাদের নিয়ে রচিত হোক, ক্ষণ, দিন, কাল আর যুগ যুগান্তরের সাতকাহন,

নিরবতা, আমার একাকী অবুঝ নিরবতা কি পারবে

সাগরের মুহুর্মুহু গর্জন থামাতে, না পাওয়ার বেদনা দিয়ে

মহাকাব্য গড়তে, ভালোবাসার সুখটুকু দিয়ে সুনিপুণ কারিগর কাকড়ার জীবন আলপনা সাজাতে, ঢেউগুলো বার বার এই তীরে কেনো আছড়ে পড়ে, অস্তগামী সূর্যটা ম্লান হেসে কি বলতে চায়?

বাতাসের সুরে কিসের আমেজ খেলা করে?

নিরবতা, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলে নিরবধি আমার একাকী চপলা নিরবতা।

৯) শুভ নববর্ষ

ছন্দা দাশ

নূতন আলোর পরশ মাখা প্রভাত বেলা

কোন খুশিতে জাগায় আমায় আলোর মেলা,

প্রাণের মাঝে দুলিয়ে দিয়ে তার হরষে

আজকে সকাল মধুর জানি এই বরষে।

মোহন রূপের উদ্ভাসে তার বদনখানি

অগ্নিস্নানে পূন‍্য হবে এই ধরণী।

রুদ্র রূপে অগ্নিজ্বলা এ বৈশাখ

দীপ্ত তেজে পবিত্রতার প্রদীপ জ্বালাক।

বর্ষ শুরুর প্রভাত বেলার মন্ত্রখানি

হৃদয় সবার যাক়না ছুঁয়ে মধুর বাণী।

Related Articles

Back to top button