নামের তালিকা
ক দিয়ে সাহাবীদের নাম অর্থসহ
আল্লাহ নবী রাসূলগণ পাঠিয়েছেন এবং অনেক সাহাবী পৃথিবীতে রয়েছেন যারা আল্লাহর রাসূলের পথে জীবন অনুসরণ করে চলেছেন এবং নবীদের সাথে থেকে ইসলাম কায়েম করার সকল কাজ করেছেন. এ সাহাবীগণ একমাত্র নবী ও রাসূলের তরিকা অনুযায়ী চলতেন. তাই অনেকে ক দিয়ে সাহাবীদের নাম জানতে চান এবং সেইগুলো নামের অর্থ কি তা সংগ্রহ করতে চান. আজ আমরা আমাদের পোস্টে ক দিয়ে সাহাবীদের সকল নাম অর্থসহ তুলে ধরব.
ক দিয়ে সাহাবীদের নামের তালিকা অর্থসহ
- কাতাদা ইবনে নোমান
- কাব ইবনে উযরা
- কাব ইবনে মালিক
- কা‘ব ইবনে যুহাইর
- কায়েস ইবনে সাদ
- কুতবা ইবনে আমির
- কুদামা ইবনে মাজউন
- কুর্জ ইবনে জাবির আল–ফিহরি
অক্ষর দিয়ে শিশুদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
- কিরতাস =নামের বাংলা অর্থ= কাগজ, কাগজের শীট।
- কুলাইব =নামের বাংলা অর্থ= হৃদয়, বিবেক।
- কুদাইমান =নামের বাংলা অর্থ= সাহসী।
- কায়েদ =নামের বাংলা অর্থ= পরিচালক, নেতা।
- কুনবার =নামের বাংলা অর্থ= এক ধরনের পাখি।
- কুসাইত =নামের বাংলা অর্থ= ন্যায়, ন্যায্য।
- কুরবত =নামের বাংলা অর্থ= নৈকট্য।
- কুদ্দুস =নামের বাংলা অর্থ= আল্লাহর নাম, পবিত্র।
- কুদরত =নামের বাংলা অর্থ= শক্তি, ক্ষমতা, অলৌকিক।
- কাহহার =নামের বাংলা অর্থ= আল্লাহর নাম।
- কাউই =নামের বাংলা অর্থ= শক্তিশালী, দৃঢ়।
- কাভী/কাবিয়্যূ =নামের বাংলা অর্থ= শক্তিশালী।
- কুতুব =নামের বাংলা অর্থ= নেতৃত্বস্থানীয়, প্রধান, নেতা।
- কিয়াম =নামের বাংলা অর্থ= প্রতিষ্ঠা, দাড়ানো।
- কাইম =নামের বাংলা অর্থ= উদীয়মান, স্থির, বিদ্যমান, সুপ্রতিষ্ঠিত।
- কুরবান =নামের বাংলা অর্থ= ত্যাগ, উৎসর্গীকৃত।
- কাতাদাহ =নামের বাংলা অর্থ= একজন সাহাবীর নাম।
- কাসিদ =নামের বাংলা অর্থ= বার্তাবাহক।
- কাইয়িম =নামের বাংলা অর্থ= সঠিক, সত্য, উপযুক্ত।
- কামার =নামের বাংলা অর্থ= চাঁদ বা চাঁদের আলো।
ইসলামিক নাম রাখার গুরুত্ব
- একটা মানুষের পরিচয় হলো নাম দিয়ে এবং সে ক্ষেত্রে নাম রাখার গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম এবং ইসলামিক ক্ষেত্রের নাম রাখার গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম প্রত্যেকের সন্তানদের ইসলামিক নাম রাখার জন্য উপদেশ প্রদান করেন যাতে নামটি গুরুত্ব ইসলামের ক্ষেত্রে এবং আল্লাহতালার ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট অর্জন হয়.
- আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
- من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.
- অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক। –মুসনাদে বাযযার (আলবাহরুয যাখখার), হাদীস ৮৫৪০
- মুহাম্মাদ ইবনে আমর ইবনে আতা বলেন, আমি আমার মেয়ের নাম রাখলাম- বাররা (নেককার, ভালো মানুষ)। তখন যয়নব বিনতে আবি সালামা বললেন-
- سُمِّيتُ بَرّةَ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: لَا تُزَكّوا أَنْفُسَكُمْ، اللهُ أَعْلَمُ بِأَهْلِ الْبِرِّ مِنْكُمْ فَقَالُوا: بِمَ نُسَمِّيهَا؟ قَالَ: سَمّوهَا زَيْنَبَ
- যয়নাব বিনতে আবী সালামার মত উম্মুল মুমিনীন হযরত জুওয়াইরিয়া রা.-এর নামও ছিল বাররা। এ নাম পরিবর্তন করে নবীজী তার নাম রাখেন জুওয়াইরিয়া।
- عَنِ ابْنِ عَبّاسٍ، قَالَ: ” كَانَتْ جُوَيْرِيَةُ اسْمُهَا بَرّةُ فَحَوّلَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اسْمَهَا جُوَيْرِيَةَ، وَكَانَ يَكْرَهُ أَنْ يُقَالَ: خَرَجَ مِنْ عِنْدِ
- নেকফালির (শুভ লক্ষণ গ্রহণের) সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার দরুন অন্য আরো কিছু নামও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপছন্দ করেছেন।
- عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: لَا تُسَمِّيَنّ غُلَامَكَ يَسَارًا، وَلَا رَبَاحًا، وَلَا نَجِيحًا، وَلَا أَفْلَحَ، فَإِنّكَ تَقُولُ: أَثَمّ هُوَ؟ فَيَقُولُ: لَا…
- আছ (অবাধ্য), উতলাহ (রুঢ়), শয়তান, শিহাব (উল্কাপি-)। -মিশকাত শরীফ, ২/৪০৮
- নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুন্দর ও মন্দ নাম পরিবর্তন করে দিতেন।
- عَنْ عَائِشَةَ، أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ كَانَ يُغَيِّرُ الاِسْمَ القَبِيحَ.
- হযরত আয়েশা রা. বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মন্দ ও অসুন্দর নাম পরিবর্তন করে দিতেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৮৩৯
- হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
- إِنّكُمْتُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.
- ইয়াযীদ ইবনে নাআমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
- إِذَاآخَى الرّجُلُ الرّجُلَ فَلْيَسْأَلْهُ عَنْ اسْمِهِ وَاسْمِ أَبِيهِ وَمِمّنْ هُوَ، فَإِنّهُ أَوْصَلُ لِلْمَوَدّةِ.
- পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
- وَ رُسُلًا قَدْ قَصَصْنٰهُمْ عَلَیْكَ مِنْ قَبْلُ وَ رُسُلًا لَّمْ نَقْصُصْهُمْ عَلَیْكَ وَ كَلَّمَ اللهُ مُوْسٰی تَكْلِیْمًا.
- অনেক রাসূলের বৃত্তান্ত আমি আপনাকে জানিয়েছি। আর অনেক রাসূলের বৃত্তান্ত জানাইনি। আল্লাহ তাআলা মূসার সাথে কথা বলেছেন। -সূরা নিসা (৪) : ১৬৪
- আল্লাহ তাআলার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। এর যে কোনো একটির শুরুতে ‘আব্দ’ শব্দটি যোগ করে নাম রাখা যেতে পারে। হাদীস শরীফে আছে-
- عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رِوَايَةً، قَالَ: لِلهِ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ اسْمًا، مِائَةٌ إِلَّا وَاحِدًا، لاَ يَحْفَظُهَا أَحَدٌ إِلَّا دَخَلَ الجَنَّةَ، وَهُوَ وتْرٌ يُحِبُّ الوتْرَ
কেন ইসলামিক নাম রাখবেন
- ১. আল্লাহর নির্দেশ : নাম রাখার গুরুত্ব সম্পর্কেও ইসলামে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, `হে জাকারিয়া, আমি (আল্লাহ) তোমাকে একপুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি। তার নাম হবে ইয়াহইয়া। এই নামে এর আগে আমি কারও নামকরণ করিনি। [সূরা মারিয়াম, আয়াত : ৭ (দ্বিতীয় পর্ব)]
- ২. সুন্দর ও অর্থবোধক নাম রাখা : সুন্দর ও অর্থবহ নাম রাখার ব্যাপারে হজরত রাসূল (সা.) গুরুত্বারোপ করেছেন।
- ৩. ইসলামের বিধান : নাম রাখা ইসলামের অন্যতম বিধান।
- ৪. নবীদের নামে নাম রাখার প্রতি উৎসাহ : হজরত রাসূলে কারীম (সা.)-এর উপাধি ও উপনাম সর্বব্যাপারে পরিব্যাপ্ত ছিল।
- ৫. পরিচয়ের মাধ্যম : নাম মানুষের পরিচয়ের মাধ্যম।
নাম পরিবর্তন করা
- কারো নাম ভালো অর্থবহ না হলে তা পরিবর্তন করে রাখা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সাহাবির এরূপ নাম পরিবর্তন করে রেখেছিলেন। (তিরমিজি : ২/১১১)
নাম রাখার সময়
- সপ্তম দিন নাম রাখা ভালো। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘জন্মের সপ্তম দিন নবজাতকের নাম রাখো।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৩২) আগে-পরে হলেও কোনো ক্ষতি নেই। জন্মের আগেও নাম নির্ধারণে বাধা নেই। (আবু দাউদ : ২/৪৪৬)