পহেলা বৈশাখের বাণী | পহেলা বৈশাখের সেরা বাণী | পহেলা বৈশাখের বিখ্যাত বাণী গুলি

বাঙ্গালীদের জীবনে পয়লা বৈশাখ অত্যন্ত উৎসবের দিন এবং আনন্দের দিন। এই দিনটি সম্পর্কে বাঙালিরা বিপন্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটিকে অতিবাহিত করে থাকেন। কেউবা কবিতা পাঠের মাধ্যমে কেউবা গানের মাধ্যমে কেউবা বাণী শেয়ার করার মাধ্যমে আবার কেউ বিবর্ণ উৎসবের মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখকে উদযাপিত করার জন্য মেতে ওঠেন।
তবে যারা পহেলা বৈশাখ সম্পর্কিত সেরা বাণী অনুসন্ধান করেন এবং সংগ্রহ করতে চান তাদের জন্য এই বাণী গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আপনি যদি এই গুরুত্বপূর্ণ বাণী গুলো পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আপনার প্রিয় জন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন তাহলে পহেলা বৈশাখ সম্পর্কিত দিবসটি অনেকে জানার সুযোগ পাবে এবং আপনি নিজেকে পহেলা বৈশাখ পালনে অংশগ্রহণ করতে উপভোগ করতে পারবেন
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে অনেকে সেরা বাণী অনুসন্ধান করেন তাদের জন্য আমরা কিছু কবি সাহিত্যিক এর সেরা বাণী নিচে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছি যা আপনি এখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারবেন
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কিত সেরা বাণী গুলি
পয়লা বৈশাখ বাঙ্গালীদের বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪২৭. বাঙালিরা প্রতি বছর পহেলা বৈশাখের পালন করে থাকেন এবং এবছর তেমনি পয়লা বৈশাখ অত্যান্ত জাঁকজমকের ও আনন্দ উৎসবের মধ্যে পালন করবেন.
এক হালি ইলিশের দাম ৪০ হাজার টাকা। গ্রামের মৃৎশিল্পীর পণ্য, বাঁশ ও বেতশিল্পীর কাজ, বিন্নি ধানের খই, সাজ-বাতাসার ব্যবসায়ীদের কী হবে? নিজেকে গ্রাম্য ও রক্ষণশীল পরিচয় দিতে আমার লজ্জা নেই। বৈশাখী মেলায় ঘুরে কেনাকাটার যে আনন্দ ‘হোম ডেলিভারি’তে কি তার চেয়ে বেশি সুখ? - সৈয়দ আবুল মকসুদ বৈশাখি মেঘ ঢেকেছে আকাশ, পালকের পাখি নীড়ে ফিরে যায় ভাষাহীন এই নির্বাক চোখ আর কতোদিন? নীল অভিমান পুড়ে একা আর কতোটা জীবন? কতোটা জীবন!! - রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
“আনন্দে আতঙ্কে নিশি নন্দনে উল্লাসে গরজিয়া মত্ত হাহা রবে ঝার সঞ্জীব বাধ উন্মাদিনী কালবৈশাখীর নৃত্য হোক তবে । - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি, আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ। মায়ার কুজ্ঝটিজাল যাক দূরে যাক॥ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বৈশাখ হে, মৌনী তাপস, কোন্ অতলের বাণী এমন কোথায় খুঁজে পেলে। তপ্ত ভালের দীপ্তি ঢাকি মন্থর মেঘখানি এল গভীর ছায়া ফেলে॥ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রুদ্রতপের সিদ্ধি এ কি ওই-যে তোমার বক্ষে দেখি, ওরই লাগি আসন পাতো হোমহুতাশন জ্বেলে॥ নিঠুর, তুমি তাকিয়েছিলে মৃত্যুক্ষুধার মতো তোমার রক্তনয়ন মেলে। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভীষণ, তোমার প্রলয়সাধন প্রাণের বাঁধন যত যেন হানবে অবহেলে। হঠাৎ তোমার কণ্ঠে এ যে আশার ভাষা উঠল বেজে, দিলে তরুণ শ্যামল রূপে করুণ সুধা ঢেলে॥ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ঈশানের পুঞ্জমেঘ অন্ধবেগে ধেয়ে চলে আসে বাধাবন্ধহারা গ্রামান্তরে বেণুকুঞ্জে নীলাঞ্জনছায়া সঞ্চারিয়া হানি দীর্ঘধারা। বর্ষ হয়ে আসে শেষ, দিন হয়ে এল সমাপন, চৈত্র অবসান-- গাহিতে চাহিছে হিয়া পুরাতন ক্লান্ত বরষের সর্বশেষ গান। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ধূসরপাংশুল মাঠ, ধেনুগণ যায় ঊর্ধ্বমুখে, ছুটে চলে চাষি। ত্বরিতে নামায় পাল নদীপথে ত্রস্ত তরী যত তীরপ্রান্তে আসি। পশ্চিমে বিচ্ছিন্ন মেঘে সায়াহ্নের পিঙ্গল আভাস রাঙাইছে আঁখি-- বিদ্যুৎ-বিদীর্ণ শূন্যে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে চলে যায় উৎকণ্ঠিত পাখি।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বীণাতন্ত্রে হানো হানো খরতর ঝংকারঝঞ্ঝনা, তোলো উচ্চসুর। হৃদয় নির্দয়ঘাতে ঝর্ঝরিয়া ঝরিয়া পড়ুক প্রবল প্রচুর। ধাও গান, প্রাণভরা ঝড়ের মতন ঊর্ধ্ববেগে অনন্ত আকাশে। উড়ে যাক, দূরে যাক বিবর্ণ বিশীর্ণ জীর্ণ পাতা বিপুল নিশ্বাসে। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আনন্দে আতঙ্ক মিশি, ক্রন্দনে উল্লাসে গরজিয়া মত্ত হাহারবে ঝঞ্ঝার মঞ্জীর বাঁধি উন্মাদিনী কালবৈশাখীর নৃত্য হোক তবে। ছন্দে ছন্দে পদে পদে অঞ্চলের আবর্ত-আঘাতে উড়ে হোক ক্ষয় ধূলিসম তৃণসম পুরাতন বৎসরের যত নিষ্ফল সঞ্চয়। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মুক্ত করি দিনু দ্বার-- আকাশের যত বৃষ্টিঝড় আয় মোর বুকে, শঙ্খের মতন তুলি একটি ফুৎকার হানি দাও হৃদয়ের মুখে। বিজয়গর্জনস্বনে অভ্রভেদ করিয়া উঠুক মঙ্গলনির্ঘোষ, জাগায়ে জাগ্রত চিত্তে মুনিসম উলঙ্গ নির্মল কঠিন সন্তোষ। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সে পূর্ণ উদাত্ত ধ্বনি বেদগাথা সামমন্ত্রসম সরল গম্ভীর সমস্ত অন্তর হতে মুহূর্তে অখণ্ডমূর্তি ধরি হউক বাহির। নাহি তাহে দুঃখসুখ পুরাতন তাপ-পরিতাপ, কম্প লজ্জা ভয়-- শুধু তাহা সদ্যঃস্নাত ঋজু শুভ্র মুক্ত জীবনের জয়ধ্বনিময়। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হে নূতন, এসো তুমি সম্পূর্ণ গগন পূর্ণ করি পুঞ্জ পুঞ্জ রূপে-- ব্যাপ্ত করি, লুপ্ত করি, স্তরে স্তরে স্তবকে স্তবকে ঘনঘোরস্তূপে। কোথা হতে আচম্বিতে মুহূর্তেকে দিক্ দিগন্তর করি অন্তরাল স্নিগ্ধ কৃষ্ণ ভয়ংকর তোমার সঘন অন্ধকারে রহো ক্ষণকাল। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমার ইঙ্গিত যেন ঘনগূঢ় ভ্রূকুটির তলে বিদ্যুতে প্রকাশে, তোমার সংগীত যেন গগনের শত ছিদ্রমুখে বায়ুগর্জে আসে, তোমার বর্ষণ যেন পিপাসারে তীব্র তীক্ষ্ণ বেগে বিদ্ধ করি হানে-- তোমার প্রশান্তি যেন সুপ্ত শ্যাম ব্যাপ্ত সুগম্ভীর স্তব্ধ রাত্রি আনে। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
এবার আস নি তুমি বসন্তের আবেশ হিল্লোলে পুষ্পদল চুমি, এবার আস নি তুমি মর্মরিত কূজনে গুঞ্জনে-- ধন্য ধন্য তুমি! রথচক্র ঘর্ঘরিয়া এসেছ বিজয়ীরাজ-সম গর্বিত নির্ভয়-- বজ্রমন্ত্রে কী ঘোষিলে বুঝিলাম, নাহি বুঝিলাম, জয় তব জয়! - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হে দুর্দম, হে নিশ্চিত, হে নূতন, নিষ্ঠুর নূতন, সহজ প্রবল, জীর্ণ পুষ্পদল যথা ধ্বংস ভ্রংশ করি চতুর্দিকে বাহিরায় ফল, পুরাতন পর্ণপুট দীর্ণ করি বিকীর্ণ করিয়া অপূর্ব আকারে তেমনি সবলে তুমি পরিপূর্ণ হয়েছ প্রকাশ-- প্রণমি তোমারে। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমারে প্রণমি আমি, হে ভীষণ, সুস্নিগ্ধ শ্যামল, অক্লান্ত অম্লান'। সদ্যোজাত মহাবীর, কী এনেছ করিয়া বহন কিছু নাহি জান। উড়েছে তোমার ধ্বজা মেঘরন্ধ্রচ্যুত তপনের জলদর্চিরেখা-- করজোড়ে চেয়ে আছি উর্ধ্বমুখে, পড়িতে জানি না কী তাহাতে লেখা। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হে কুমার, হাস্যমুখে তোমার ধনুকে দাও টান ঝনন রনন, বক্ষের পঞ্জর ভেদি অন্তরেতে হউক কম্পিত সুতীব্র স্বনন। হে কিশোর, তুলে লও তোমার উদার জয়ভেরী, করহ আহ্বান। আমরা দাঁড়াব উঠি, আমরা ছুটিয়া বাহিরিব, অর্পিব পরান। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
চাব না পশ্চাতে মোরা, মানিব না বন্ধন ক্রন্দন, হেরিব না দিক-- গনিব না দিন ক্ষণ, করিব না বিতর্ক বিচার উদ্দাম পথিক। মুহূর্তে করিব পান মৃত্যুর ফেনিল উন্মত্ততা উপকণ্ঠ ভরি-- খিন্ন শীর্ণ জীবনের শত লক্ষ ধিক্কারলাঞ্ছনা উৎসর্জন করি। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
শুধু দিনযাপনের শুধু প্রাণধারণের গ্লানি শরমের ডালি, নিশি নিশি রুদ্ধ ঘরে ক্ষুদ্রশিখা স্তিমিত দীপের ধূমাঙ্কিত কালি, লাভ-ক্ষতি-টানাটানি, অতি ক্ষুদ্র ভগ্ন-অংশ-ভাগ, কলহ সংশয়-- সহে না সহে না আর জীবনেরে খণ্ড খণ্ড করি দণ্ডে দণ্ডে ক্ষয়। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
যে পথে অনন্ত লোক চলিয়াছে ভীষণ নীরবে সে পথপ্রান্তের এক পার্শ্বে রাখো মোরে, নিরখির বিরাট স্বরূপ যুগযুগান্তের। শ্যেনসম অকস্মাৎ ছিন্ন করি ঊর্ধ্বে লয়ে যাও পঙ্ককুণ্ড হতে, মহান মৃত্যুর সাথে মুখামুখি করে দাও মোরে বজ্রের আলোতে। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তার পরে ফেলে দাও, চূর্ণ করো, যাহা ইচ্ছা তব-- ভগ্ন করো পাখা। যেখানে নিক্ষেপ কর হৃত পত্র, চ্যুত পুষ্পদল, ছিন্নভিন্ন শাখা, ক্ষণিক খেলনা তব, দয়াহীন তব দস্যুতার লুণ্ঠনাবশেষ, সেথা মোরে ফেলে দিয়ো অনন্ততমিস্র সেই বিস্মৃতির দেশ। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পরিশেষে বলা যায় যে বাংলা নববর্ষ ২০২২ নবাঙ্কুর ইক্ষুবনে এখনো ঝরিছে বৃষ্টিধারা বিশ্রামবিহীন, মেঘের অন্তর-পথে অন্ধকার হতে অন্ধকারে চলে গেল দিন। শান্ত ঝড়ে, ঝিল্লিরবে, ধরণীর স্নিগ্ধ গন্ধোচ্ছ্বাসে, মুক্ত বাতায়নে বৎসরের শেষ গান সাঙ্গ করি দিনু অঞ্জলিয়া নিশীথগগনে।
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরএর প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের প্রথম দিনে শুভ নববর্ষ হিসেবে বাঙালির পালন করে থাকেন। এই দিবসটি বাঙ্গালীদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস এবং প্রতি বছর এ দিবসকে বাঙালির পালন করেন। অনেকেই দিবসকে বিভিন্ন বাণীর মাধ্যমে মানুষকে বোঝার চেষ্টা করেন এবং এজন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে চান। তাই যারা পয়লা বৈশাখ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বাণী গুলি অনুসন্ধান করেন এবং সংগ্রহ করতে চান তাদের জন্য উপরের সবগুলো বাণী সংযুক্ত করা হলো।